লকডাউনে চালকদের ওভারটাইমের অর্থ ফেরত দিতে নোটিশ

লকডাউনের সময় সরকারি গাড়ি চালকদের অবৈধভাবে পরিশোধিত ওভারটাইমের অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়ার জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ নোটিশ পাঠান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক, পরিবহন পুলের অতিরিক্ত সচিবকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, করোনার সময়ে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরনের যানবাহন বন্ধ ছিল এবং সাধারণ মানুষ অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়াটাও অনেকটাই নিষিদ্ধ ছিল। ২৬ মার্চ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত পুরো দেশ ছিল লকডাউন। জুলাই মাসের প্রথম দিকে সীমিত আকারে সরকারি অফিস আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
পরিপত্র অনুযায়ী সরকারি গাড়ি চালকরা মাসে সর্বোচ্চ ২৫০ ঘণ্টা ওভারটাইমের জন্য বেতন ভাতা পেতে পারেন। যেহেতু করোনার সময় অফিস-আদালত বন্ধ ছিল, সেহেতু সরকারি গাড়ি চালকদের ওভারটাইম করার কোনো সুযোগই ছিল না। অথচ বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী অন্য সময়ের মতো লকডাউনের সময়েও প্রত্যেক চালক প্রতিমাসে ২৫০ ঘণ্টা ওভারটাইমের জন্য বেতন-ভাতা নিয়েছেন। ওই চালকরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার অধীনে গাড়ি চালিয়ে থাকেন এবং ওভারটাইমের প্রত্যয়নের জন্য প্রত্যেক সরকারি অফিসার একটি প্রত্যয়নপত্র দিয়ে থাকেন। যার ভিত্তিতে ওভারটাইমের অর্থ পরিশোধ করা হয়।
লকডাউনের সময় সরকারি কর্মকর্তারা তাদের চালকদের প্রতি মাসে ২৫০ ঘণ্টা ওভারটাইমের প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন। এভাবে ওভারটাইম না করেও চালকরা সরকারি রাজস্ব থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা অতিরিক্ত অর্থ নিয়েছেন, যা শুধু বেআইনি নয় বরং অনৈতিক ও সরকারি চাকরি আইনের পরিপন্থী এবং দণ্ডবিধি অনুযায়ী প্রতারণা এবং বিশ্বাসভঙ্গের শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সরকারি চালকরা ওভারটাইম না করেও ওভারটাইমের জন্য বেতন-ভাতা নিয়ে অপরাধ করেছেন। অন্যদিকে যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ড্রাইভারকে ওভারটাইম না করা সত্ত্বেও প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই দণ্ডবিধি এবং সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অতএব এ বিষয়টি তদন্ত করে পরিশোধিত টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়া এবং সংশ্লিষ্ট চালক এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনি নোটিশে অনুরোধ করা হয়েছে।
আগামী সাত দিনের মধ্যে ওভারটাইমের অর্থ ফেরতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া না হলে, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির।
এমএইচডি/জেডএস