ডিজিটাল আইনের মামলায় ‘দৈনিক সোজাসাপটা’র সম্পাদকের জামিন

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করার জেরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় স্থানীয় দৈনিক সোজাসাপটা পত্রিকার সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু। তিনি বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
গত ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা স্থানীয় দৈনিক সোজাসাপটার প্রকাশক ও সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই মামলা করেন সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) হাফিজুর রহমান।
দৈনিক সোজাসাপটার প্রকাশক ও সম্পাদকের দায়িত্ব ছাড়াও আসামি আবু সাউদ মাসুদ নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের কার্যকরী কমিটির কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এই প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইদুজ্জামান জানান, ৪ ডিসেম্বর স্থানীয় দৈনিক সোজাসাপটা পত্রিকায় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে শামীম ওসমানের নামে মিথ্যা ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৯ ও ৩১ ধারায় ওই পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলায় তাকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে নিজেকে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সচিব পরিচয় দিয়ে বাদী হাফিজুর রহমান বলেন, সাংবাদিক আবু সাউদ মাসুদ তার পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘ইবলিশের খপ্পরে সোজাসাপটা’ শিরোনামে ইচ্ছাকৃতভাবে সংবাদ প্রকাশ করে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ছবি বিকৃত করে রাজনৈতিকভাবে তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য তার বিরুদ্ধে বিকৃত তথ্য প্রকাশ করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, ওই শিরোনামের প্রতিবেদনটি পত্রিকার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এই প্রতিবেদনের কারণে পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে শামীম ওসমানের মানহানি হয়েছে। এমন বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করায় জেলায় অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার উপক্রম হয়েছে।
এ অবস্থায় তিনি সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে আলোচনা করে থানায় মামলা করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিলের চেষ্টা করছেন। প্রতিবেদনের সঙ্গে শামীম ওসমানের একটি কার্টুনও ছাপা হয়। এদিকে পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিল করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (জেলা প্রশাসক)। মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ভুল উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পাঠানো ডিক্লারেশন বাতিলের একটি চিঠি ৮ ডিসেম্বর সম্পাদক ও প্রকাশক আবু সাউদ মাসুদ পেয়েছেন। তবে গত ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিলের সিদ্ধান্তও স্থগিত করেছেন।
এমএইচডি/এসএসএইচ/