সরকারি চালকদের ওভারটাইমের টাকা নেওয়ার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ

লকডাউনকালীন সরকারি চালকদের অবৈধভাবে ওভারটাইমের অর্থ নেওয়ার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি রুল জারি করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
এর আগে লকডাউনকালীন সরকারি চালক অবৈধভাবে পরিশোধিত ওভারটাইমের অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরতের জন্য হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ রিট দায়ের করেন।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর লকডাউনকালীন সরকারি চালকদের অবৈধভাবে পরিশোধিত ওভারটাইমের অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরতের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক, পরিবহন পুলের অতিরিক্ত সচিবকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, করোনাকালীন সারা বাংলাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল এবং সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সব প্রকার যানবাহন বন্ধ ছিল। সাধারণ মানুষ অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়াটাও অনেকটাই নিষিদ্ধ ছিল। ২৬ মার্চ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত পুরো দেশ ছিল লকডাউন। জুলাই মাসের প্রথম দিকে সীমিত আকারে সরকারি অফিস আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পরিপত্র অনুযায়ী সরকারি গাড়ি চালকরা মাসে সর্বোচ্চ ২৫০ ঘণ্টা ওভারটাইমের জন্য বেতন ভাতাদি পেতে পারেন। যেহেতু করোনাকালীন অফিস-আদালত বন্ধ ছিল সেহেতু সরকারি চালকদের ওভারটাইম করার কোনো সুযোগই ছিল না। অথচ বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী অন্য সময়ের মতো লকডাউনকালীন প্রত্যেক চালক প্রতিমাসে ২৫০ ঘণ্টা ওভারটাইমের জন্য বেতন-ভাতাদি নিয়েছেন। ওই চালকরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার অধীনে গাড়ি চালিয়ে থাকেন এবং ওভারটাইমের প্রত্যয়নের জন্য প্রত্যেক সরকারি অফিসার একটি প্রত্যয়নপত্র দেন। যার ভিত্তিতে ওভারটাইমের অর্থ পরিশোধ করা হয়। লকডাউনকালীন সরকারি কর্মকর্তারা তাদের চালকদের প্রতি মাসে ২৫০ ঘণ্টা ওভারটাইমের প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এভাবে ওভারটাইম না করেও চালকরা সরকারি রাজস্ব থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করেছেন, যা শুধু বেআইনি নয় বরং অনৈতিক ও সরকারি চাকরি আইনের পরিপন্থী, সেই সঙ্গে দণ্ডবিধি অনুযায়ী প্রতারণা এবং বিশ্বাসভঙ্গের শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সরকারি চালকরা ওভারটাইম না করেও ওভারটাইমের জন্য বেতন-ভাতা নিয়ে অপরাধ করেছেন। অন্যদিকে যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী চালকদের ওভারটাইম না করা সত্ত্বেও প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই দণ্ডবিধি এবং সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী শাস্তিরযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এমএইচডি/এসএম