মসজিদে ইফতার-সেহরিতে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে নোটিশ

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আসন্ন রমজানে মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন না করতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের তাজ জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়েরের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ বি এম গোলাম মোস্তফা এ নোটিশ পাঠান। রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের কাছে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ব্যারিস্টার এ বি এম গোলাম মোস্তফা ঢাকা পোস্টকে বলেন, মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় যে নির্দেশ জারি করেছে, তা পবিত্র কোরআন ও হাদিসের পরিপন্থি। সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য নোটিশ দিয়েছি। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার (৫ এপ্রিল) করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় আসন্ন রমজানে মসজিদে সেহরি ও ইফতারের আয়োজন না করার নির্দেশ দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে মসজিদে জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া মসজিদ কর্তৃপক্ষকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষে মসজিদে জামায়াতে নামাজের জন্য আবশ্যিকভাবে শর্তগুলো পালনের জন্য অনুরোধ করছে।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।
২. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওযু ও সুন্নত নামাজ আদায় করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওযু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
৩. মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, মুসল্লিদের নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে।
৪. কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
৫. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিকে জামাতে অংশগ্রহণ করা হতে বিরত থাকবে হবে।
৬. সংক্রমণ রোধে নিশ্চিতকল্পে মসজিদের ওযুখানায় সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।
৭. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
৮. মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না।
৯. করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে খতিব ও ইমামরা দোয়া করবেন।
১০. মসজিদের খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।
এসব নির্দেশনা মানা না হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এমএইচডি/এফআর