সাধারণ ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুদক আইনের ২৭ ধারায় মামলা চলতে পারে না

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনের ২৭(১) ধারায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া সাধারণ কোনো ব্যক্তির (প্রাইভেট পার্সন) বিরুদ্ধে মামলা চলতে পারে না বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত না থাকলে কোনো সাধারণ ব্যক্তির পক্ষে দুর্নীতি করা সম্ভব না।
জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ময়মনসিংহের মমতাজ বেগম নামে এক গৃহিনীর সাজার বিরুদ্ধে আপিল গ্রহণ করে রোববার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন। আদালত রায়ে মোমতাজ বেগমকে তিন বছরের সাজা থেকে খালাস দিয়েছেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম বায়েজিদ।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের গৃহিণী মোমতাজ বেগমকে তিন বছরের সাজা দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭(১) ধারায় তিন বছরের সাজার পাশাপাশি তাকে জরিমানা করা হয়। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন মোমতাজ বেগম।
২০১১ সালের ২৪ মে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে মোমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারে বলা হয়, মিসেস মমতাজ বেগম (৪৮), স্বামী মো. আতিকুল ইসলাম, গৃহিণী, বর্তমান ঠিকানা- বাসা নং ৩৬৬, (নিচতলা ডানদিকে) বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিসার্স কোয়ার্টার, বাংলাদেশ স্টেশনারি কম্পাউন্ড, তেজগাঁও, ঢাকা। স্থায়ী ঠিকানা-গ্রাম- তেতুলিয়া, উপজেলা- গফরগাঁও, জেলা- ময়মনসিংহ দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ২,৪০,০০০/- টাকা সম্পদের তথ্য গোপনসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৩৬,৬৮,০০০/-টাকার সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি তার নিজ নামে বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তির নামে, এমন কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির দখলে রহিয়াছে বা মালিকানা অর্জন করেছেন, যা অসাধু উপায়ে অর্জিত হয়েছে এবং তাহার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ বলে মনে করবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে এবং তিনি ওই সম্পত্তি দখল সম্পর্কে আদালতের কাছে বিচারে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হলে ওই ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) বছর এবং অন্যূন ৩ (তিন) বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদে কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং তদুপরি অর্থ দণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন এবং ওই সম্পত্তিগুলো বাজেয়াপ্ত যোগ্য হবে।’
এমএইচডি/জেডএস