চাঁদাবাজি মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতিকে খালাস

চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দায়ের হওয়া আলোচিত চাঁদাবাজি মামলায় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবুসহ মোট ৬ আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) চট্টগ্রামের সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শামসুল আরেফিনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
খালাস পাওয়া বাকি পাঁচজন হলেন— নগর ছাত্রলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক আবু নাছের চৌধুরী, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য এ টি এম মঞ্জুরুল ইসলাম, নগরের শুলকবহর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম নাজমুল আহসান, যুবলীগকর্মী ইদ্রিস মিয়া ও ইমরান হোসেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুর রশীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলাটিতে একমাত্র বাদী হাজির হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আর কেউ সাক্ষ্য না দেওয়ায় আসামিদের সবাইকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, আলোচিত মামলার বাদী বন্ধন নাথ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা। তিনি জীবিকার তাগিদে কুয়েতে থাকেন। নগরের পাঁচলাইশ থানা এলাকায় জমি কিনে ২০১৬ সালে বাড়ি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু অভিযুক্তরা তাকে জিম্মি করে চাঁদা দাবি করেন। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তার পিঠে গুলি করেন। এরপর নানা সময়ে চেক ও ক্যাশে আসামিদের ৭০ লাখ টাকা দেন। এতেও ক্ষান্ত হননি আসামিরা। ২০১৮ সালে এসে পুনরায় বাড়ির কাজ শুরু করতে চাইলে আসামিরা আরও ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এরপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন্ধন নাথ ছয়জনের বিরুদ্ধে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি ও আদায়ের অভিযোগে মামলা করেন।
মামলার পর পুলিশ দেবাশীষ নাথ ও এ টি এম মঞ্জুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। আদালতের আদেশে তাদের কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। যদিও সেখানে ব্যবসায়িক লেনদেনের তথ্য দেখাতে পারেননি আসামিরা। ঘটনাটি তৎকালীন সময়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ওই সময় আসামিপক্ষের লোকজন পুলিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনও করেছিলেন। তৎকালীন পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ আন্দোলনকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে থামিয়েছিলেন। এরপর ২০১৯ সালের অক্টোবরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তৎকালীন পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়ালী উদ্দিন আকবর।
২০২২ সালের ২১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। সবশেষ গত ২১ জুন বাদী বন্ধন নাথ আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন যে, তিনি মামলার আসামিদের চেনেন না। একই সঙ্গে তিনি আর মামলাটি চালাতে চান না। যদিও গত বছর চাঁদাবাজির ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন বন্ধন নাথ। এরপর আইনিপ্রক্রিয়া শেষে আজ (বৃহস্পতিবার) আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণা করে আদালত।
এমআর/এমএ