‘আমলাদের প্রাধান্য, জাতীয় আইনগত সংস্থায় আমার কোনো ভূমিকা নেই’

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আমাদের জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালনা বোর্ড রয়েছে। এর সভাপতি রয়েছেন মন্ত্রী। অথচ এই পরিচালনা বোর্ডে প্রধান বিচারপতির কোনো প্রতিনিধি নেই। একজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলকে রাখা হয়েছে। তিনি তো প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধিত্ব করেন না। আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালনা বোর্ডে যারা আছেন তাদের বেশিরভাগই আমলা। অথচ আইনি সেবার মতো জাতীয় এই সংস্থায় প্রধান বিচারপতির কোনো ভূমিকা নেই।
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ‘স্মার্ট লিগ্যাল এইড, স্মার্ট দেশ-বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ এবং ‘উচ্চ আদালতে স্মার্ট আইনি সেবার প্রসার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন
প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইড কমিটি রয়েছে। এই কমিটির যে সভাপতি হন তিনি হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি তাকে মনোনয়ন দেন। কমিটিতে কারা থাকবেন তাও বলা আছে। কিন্তু কমিটির চেয়ারম্যান কার কাছে দায়বদ্ধ প্রধান বিচারপতি কাছে না জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কাছে?
তিনি বলেন, ভারতে লিগ্যাল এইড সংস্থার যে প্রধান হন তিনি সে দেশের প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত হন একজন জ্যেষ্ঠ জেলা জজ। পর্যাপ্ত বাজেটও আসে সরকার থেকে। সেখানে বিচার বিভাগের প্রাধান্য রয়েছে। অথচ আমাদের এখানে বেশিরভাগই আমলা। এরা অমুক মন্ত্রণালয়, তমুক মন্ত্রণালয়ের সচিব। এজন্য বলছি ওই দেশের চিন্তার সঙ্গে আমাদের চিন্তার পার্থক্য দেখুন।
তিনি বলেন, আমরা মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করলাম। আগে কমিশনের চেয়ারম্যান হতেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি। আর এখন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কারা হন, এগুলো নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, লিগ্যাল এইডকে স্মার্ট করতে গেলে যারা লিগ্যাল এইড দেবেন অর্থাৎ আইনজীবীরা তাদের আগে স্মার্ট হতে হবে। এই স্মার্ট মানে শুধু কি পোশাক-আশাকে, এই স্মার্টনেস হচ্ছে আপনাকে আইন জানতে হবে। দুস্থ বিচারপ্রার্থীদের আইনি সহায়তা দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেন, শুধু স্মার্ট স্লোগান দিলেই হবে না, সঠিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে দুস্থ বিচারপ্রার্থীদের যথাযথ আইনি সেবা দিতে হবে।
তিনি বলেন, হাইকোর্ট বিভাগের যতগুলো বেঞ্চ রয়েছে এসব বেঞ্চ যদি প্রতি মাসে একটা এবং আপিল বিভাগ দুটি করে লিগ্যাল এইডের মামলা নিষ্পত্তি করেন তাহলে বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হবেন। দ্রুত মামলাগুলো নিষ্পত্তি হবে।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাইমা হায়দারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম, অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক প্রমুখ।
এমএইচডি/এসকেডি