সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান বিচারপতির

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, মানবিক শিক্ষা গ্রহণ করে বৈষম্যহীন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, যে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য আমাদের জুলাই বিপ্লবের শহীদরা তাদের জীবন আত্মাহুতি দিয়েছেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিভেদের দেয়ালগুলোকে সম্প্রীতির বন্ধনে রূপান্তরিত করার মধ্যেই মানবজাতির মুক্তির পথ নিহিত।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে বিজয়া পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমরা যে যার অবস্থান থেকে সাম্প্রদায়িক বিভেদকে প্রতিহত করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবো এবং আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট বারকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরবো।
তিনি বলেন, বিগত শতাব্দীর বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক সংঘাত আমাদের শিখিয়েছে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহাবস্থান জাতীয় অগ্রগতির অন্যতম মূল ভিত্তি। তাই সবার প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, পারস্পরিক সহাবস্থান ও সম্প্রীতির মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবোত্তর এই নতুন বাংলাদেশকে সম্মিলিতভাবে আমরা অগ্রগতির পথে নিয়ে যাবো। জাতীয় ঐক্য পরিণত হোক এমন এক প্রাতিষ্ঠানিক ঐকমত্যে যার ওপর ভর করে রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ বা স্তম্ভ স্ব স্ব অবস্থান হতে প্রকৃত অর্থে স্ব স্ব স্বাধীনতা বজায় রেখে সেই জাতীয় ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হয়।
সব ধর্মের মানুষকে মিলেমিশে থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, উৎসব আমাদের মধ্যে একাত্মতা বাড়ায়। উৎসব, তা যে ধর্মেরই হোক না কেন, আমাদের একাত্মতার প্রতীক। সবাই মিলেমিশে উৎসব উপভোগ করার মাধ্যমে আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে মানুষে মানুষে বিভেদ ও বৈষম্য দূর করে মানবিক মূল্যবোধকে অগ্রাধিকার প্রদানের বিষয়ে শিক্ষাদান করি। এভাবেই ধীরে ধীরে একটি সমাজ আলোকিত হয়। শারদীয় দুর্গোৎসবের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কেননা শারদীয় দুর্গোৎসব মূলত ধর্মীয় উৎসব হলেও এর বিশেষ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্যের কারণে ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে সবার আনন্দ উৎসব হিসেবে কালের বিবর্তনে ইতোমধ্যে অনন্য সার্বজনীনতা লাভ করেছে।
ধর্ম আমাদের উদারতা, মানবিকতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও সহিষ্ণুতা শিক্ষা দেয়। আবার ধর্মের অপব্যাখ্যাই অনেক সময় মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
বিজয়া পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন,ধর্মীয় আলোচক স্বামী স্থিরাত্মানন্দজী, অ্যাডভোকেট সব্যসাচী মন্ডল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিজয়া পুনর্মিলনী ও বাণী অর্চনা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী।
এমএইচডি/এসএম