সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাদাবি : দুজনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

চট্টগ্রাম নগরের এক ব্যবসায়ীকে সাংবাদিক পরিচয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে ইফতেখারুল করিম চৌধুরী (৫৪) ও মাজেদুল ইসলাম (৪৫) নামে দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আজ (বৃহস্পতিবার) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বকর সিদ্দিকের আদালত এ আদেশ দেন। আসামিদের মধ্যে ইফতেখারুল করিম আনোয়ারা উপজেলার সরকার হাট এলাকার হানিফ মোহাম্মদ এনামুল করিম চৌধুরীর ছেলে এবং মাজেদুল ইসলাম লক্ষ্মীপুর চন্দ্রগঞ্জ মোল্লাবাড়ী এলাকার জাফর আহমদের ছেলে।
এর আগে গত ১৫ জুলাই দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট৷ সংস্থাটির পরিদর্শক সত্যজিৎ বড়ুয়ার করা তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে চাঁদাদাবি ও হুমকির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মামলার বাদী মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী। আসামি ইফতেখারুল করিম চৌধুরী নিজেকে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বাদী ব্যবসায়ীকে ভয় দেখাতে থাকেন। অন্য আসামি মাজেদুল ইসলামও নিজেকে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের বার্তা প্রেরক পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়ি-অফিসে গিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। পরে সেসব ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে সামাজিক ও ব্যবসায়িক সুনাম নষ্ট করার হুমকি দেন।
তদন্তে উঠে আসে, আসামিরা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অর্থ পাচারকারী ও অনৈতিক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এর বিনিময়ে তারা মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। ইফতেখারুল করিম চৌধুরী দাবি করেন ১ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং মাজেদুল ইসলাম দাবি করেন ৫০ লাখ টাকা।
পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামি ইফতেখারুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে আগে থেকেই অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলা ছিল। এমনকি তিনি সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে অতীতে আরও কয়েকজনকে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করেছেন। একইভাবে মাজেদুল ইসলামও অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ও চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল গালিব বলেন, আসামিরা প্রকৃতপক্ষে কোনো সাংবাদিক না। তারা নানা সময়ে এই পরিচয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। আদালতে মামলাটি দায়েরের পর এটি তদন্ত করে পিবিআই। তদন্ত শেষে প্রমাণ পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় সংস্থাটি। আদালত এটি আমলে নিয়ে দুই কথিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছেন।
চাঁদা দাবির অভিযোগ এবং পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে মাজেদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, চাঁদা দাবির অভিযোগটি মিথ্যা। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে যে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তা পক্ষপাতমূলক ও অসম্পূর্ণ। তদন্ত কর্মকর্তা আমার পক্ষে থাকা সব প্রমাণ (কললিস্ট, সিসিটিভি ফুটেজ, অডিও রেকর্ড) উপেক্ষা করেছেন।
এমআর/এনএফ