আপনি নার্ভাস কেন, সাক্ষীকে ট্রাইব্যুনাল

নিজ গতিতে এগিয়ে চলছে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার। চলমান রয়েছে একাধিক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। এর মধ্যে রাজধানীর চানখারপুলে ছয় হত্যাযজ্ঞের দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল আজ । এদিন একজন সাক্ষীর উদ্দেশ্যে নার্ভাস কেন জানতে চান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) এ মামলায় ১৫ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন ১৩ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্য অজয় কুমার। তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন
এর মধ্যে আসামি কনস্টেবল মো. নাসিরুল ইসলামের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী আবুল হাসান। তিনি অজয়ের কাছে পাল্টা আক্রমণ হয়েছে কিনা জানতে চান। সাক্ষীকে প্রশ্ন করে আবুল হাসান বলেন, ওই দিন চানখারপুলে যখন আপনারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তখন আপনাদের ওপর কোনো আক্রমণ হয়েছিল কিনা।
এ সময় জবাব দিতে কিছুটা দেরি করেন সাক্ষী অজয়। এরপর তিনি বলেন, কোনো ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়নি।
এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষীকে উদ্দেশ্য করে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি নার্ভাস কেন? জবাবে নিজের জ্বরের কথা জানান অজয়।
এরপর ট্রাইব্যুনাল বলেন, মনে হচ্ছে আপনি ভয় পাচ্ছেন। ভয় পেলে সাক্ষ্য দেবেন কীভাবে। তখন প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকেও সাক্ষীর অসুস্থতার কথা জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, সাক্ষীকে এটা বলেছেন। পরে সাক্ষী অসুস্থের কথা জানিয়েছেন।
অপরদিকে, পলাতক চার আসামির পক্ষে জেরার সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ কেন মানা হয়নি; অজয়ের কাছে জানতে চান আইনজীবী কুতুবউদ্দিন আহমেদ।
সাক্ষী অজয় বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ মানা কর্তব্য। তবে সবক্ষেত্রে নয়। ছাত্ররা নিরস্ত্র ছিলেন। আমি জানতাম- আমার রাইফেলের একটি গুলিতে একটি জীবন যায়। এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ সত্ত্বেও গুলি করিনি।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান, তারেক আবদুল্লাহসহ প্রসিকিউশন টিমের অন্যরা।
এছাড়া শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশেদ হোসেনের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি, কনস্টেবল ইমাজ হোসেন ইমনের পক্ষে আইনজীবী মো. জিয়াউর রশিদ ও কনস্টেবল মো. সুজন মিয়ার পক্ষে আইনজীবী সিফাত মাহমুদ জেরা করেন। এ মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে, কারাগার থেকে আজ সকালেও চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করেছে পুলিশ। তাদের উপস্থিতিতেই চলছে সাক্ষ্যগ্রহণ। এছাড়া পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।
এমআরআর/এআইএস