চাঁদাবাজির মামলায় এনসিপি নেতাসহ ৪ জন রিমান্ডে

মব তৈরি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি হাসপাতালে চাঁদাবাজির সময় গ্রেপ্তার এক এনসিপি নেতাসহ চার আসামির দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান এ আদেশ দেন। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদপুর থানার যুগ্ম সমন্বয়কারী আব্দুর রহমান মানিক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বি, হাবিবুর রহমান ফরহাদ ও মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। আরেক আসামি মো. শাহিন হোসেনকে প্রয়োজনবোধে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
এর আগে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আসামিকে কারাগারে পাঠিয়ে রিমান্ড শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আদালত।
আরও পড়ুন
আদালতে প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আজ পাঁচজনকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. নাজমুল ইসলাম আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালত চার আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে, রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চাঁদাবাজির সময় সেনাবাহিনী তাদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। চাঁদাবাজির এ ঘটনায় সেইফ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শিল্পী আক্তার সোমবার মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১২টায় আসামি মো. শাহিন মোহাম্মদপুরের সেইফ হাসপাতালে এসে গর্ভবতী স্ত্রীর বাচ্চার অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডেলিভারির অনুরোধ করে। কর্তৃপক্ষ তাকে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি অনুরোধ করে বলেন, যেভাবে হোক আমার স্ত্রীর ডেলিভারির ব্যবস্থা করেন। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে সব কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে ডেলিভারির কাজ শুরু করেন। বাচ্চার ডেলিভারির চিকিৎসা চলমান থাকা অবস্থায় নরমাল ডেলিভারিতে একটি মৃত ছেলে সন্তান প্রসব হয়। বাচ্চা মারা যাওয়ার কারণে মামলা না করার জন্য হাসপাতালের মালিকের ছেলে মো. আবু সাইদের কাছে গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় আসামিরা হাসপাতালের মেশিন ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে দেড় লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। একপর্যায়ে আসামিরা সাঈদকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। ভয়ে আসামিদেরকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেন বাদী। আসামিরা চাঁদা নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় এবং অবশিষ্ট টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়ার জন্য বলে। এরপর বিভিন্ন সময় আসামিরা মোবাইল ফোনে টাকা চায়। অন্যথায় মামলার হুমকি দেয়। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর আসামিরা ১ লাখ টাকা চাঁদা নেয়। বাকি টাকা দ্রুত দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর ধানমন্ডিতে একজন প্রকাশককে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে তার বাসায় মব করে গত ২০ মে আটক হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ তিনজন। ওই দিন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এনআর/জেডএস