‘গ্রেপ্তারের ক্ষমতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর, অন্য কারো নয়’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, অ্যারেস্টিং (গ্রেপ্তার) অথরিটি শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানে হচ্ছে পুলিশ। আর্মির হাতে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নেই। এটা নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আইনের দৃষ্টিতে প্রত্যেক মানুষই সমান বলে মন্তব্য করে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আইনের দৃষ্টিতে পুলিশ, আর্মি, সিভিলিয়ান বলে কোনো জিনিস নেই। আইন সবসময় ব্যক্তিকে বিবেচনা করবে। সেই ব্যক্তির গায়ে কত দামি পোশাক আছে অথবা বস্ত্রহীন কিনা এটা দেখবে না। প্রত্যেক মানুষ আইনের দৃষ্টিতে সমান। এখানে কারো উঁচু, কারো নিচু মর্যাদা, কারো জন্য অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই। সুতরাং বাংলাদেশের একজন বস্ত্রহীন বা রাস্তায় বাস করা মানুষের যেমন অধিকার, ঠিক একইভাবে কেউ যদি ইউনিফর্মে থাকেন বা আরও দামি পোশাক পরিহিত থাকেন তার মর্যাদাও একই রকম।
আরও পড়ুন
গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, আদালতের আদেশটা পালনের ব্যাপারে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের অফিসকে অবহিত করা হয়েছে। তারা গ্রেপ্তার করবে না। তারা অবহিত থাকার অর্থ হচ্ছে যখন পুলিশ এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটা তামিল করতে যাবে, তারা অবহিত থাকলে এই পরোয়ানাটা তামিল করতে তাদের সাহায্য করতে পারবে। সুতরাং অ্যারেস্টিংয়ের পাওয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর, অন্য কারো নয়।
সেনা কর্মকর্তাদের হেফাজতে থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা নিয়ে আমি খুব কম কথা বলবো। যতক্ষণ পর্যন্ত গ্রেপ্তার দেখানো না হয়েছে; অর্থাৎ যদি পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে, তখন থেকে এ আইন প্রযোজ্য হবে, ২৪ ঘণ্টায় কোর্টে আনতে হবে। কিন্তু যদি গ্রেপ্তার না দেখানো হয়, তাহলে ওই আইন প্রযোজ্য নয়। যখনই গ্রেপ্তার দেখানো হবে বা গ্রেপ্তার করা হবে, তখন থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই আদালতে প্রডিউস করতে হবে।
এদিন বেলা ১১টা ৪০ মিনিট থেকে বিকেল পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক চলে। তা শেষ না হওয়ায় আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) পর্যন্ত মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি হিসেবে রয়েছেন। তবে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে নিজের জবানবন্দি পেশ করেছেন সাবেক এই আইজিপি।
এমআরআর/এমএসএ