বিয়ে গোপন করায় তরুণীর কারাদণ্ড, ফেঁসে গেলেন কাজী

বিয়ে গোপন করার দায়ে মোছা. নুসরাত জাহান তাসনিম ওরফে মোছা. তাসমিন নাহার (২৬) নামে এক তরুণীকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। দণ্ডের পাশাপাশি তাকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেছেন।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) আদালত সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়া প্রতারণার দায়ে কাজী আবু মুসা আহম্মদের দুই বছরের কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. নাজমুল ইসলাম তালুকদার এ তথ্য জানান।
রায়ের আদেশে বলা হয়েছে, আসামি নুসরাতের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৯৫ ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তবে ৪০৬ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় নুসরাত আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এরপর তাকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
অপর আসামি আবু মুসার বিরুদ্ধে ৪২০ ধারার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। তবে তিনি পলাতক থাকায় সাজাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। একইসঙ্গে তার নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার-এর লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া অপর আসামি মো. আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে মামলা দায় থেকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালে রংপুরের জাহিদ হাসান নামে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার বাদী হয়ে ঢাকার আদালতে মামলা করেন। এতে নুসরাত জাহান ও বিয়ের কাজী আবু মুসাসহ তিনজনকে আসামি করেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর এক লাখ টাকা দেনমোহরে আসামি নুসরাতকে বিয়ে করেন জাহিদ হাসান। এসময় আসামি নুসরাতকে অবিবাহিত (কুমারি) হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। পরে ২০১৮ সালে নুসরাতের ভাইকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর কথা বলে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। তবে তিনি এই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামি নুসরাত তার সঙ্গে সংসার করবে না বলে জানান। এ বিষয়ে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ ঘরোয়া সালিশি আয়োজন করা হয়। তখন তার কাছে দেনমোহর বাবদ তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়। এরপর তিনি জানতে পারেন আগের বিয়ে গোপন রেখে তার সঙ্গে আসামি নুসরাতকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এনআর/জেডএস