বিচারপতি আশরাফুল কামালের বাবা আবদুল গোফরানের ইন্তেকাল

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক প্রকৌশলী মো. আবদুল গোফরান (৮৮) আজ মঙ্গলবার সকালে নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই সন্তান ও নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মো. আবদুল গোফরান ১৯৩৭ সালে নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি ১৯৫৮ সালে আহছান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমান বুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৯৪ সালে চীনের চেংদু থেকে বায়োগ্যাস প্রযুক্তির ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
কর্মজীবনে তিনি ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থায় নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন শেষে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
অবসর গ্রহণের পর আবদুল গোফরান আন্তর্জাতিক পরামর্শক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি বিশ্ব ব্যাংক, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ইউএনডিপি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাইকা, জিআইজেড, এবং নেদারল্যান্ডসের আইএইচএস ও এসএনভি-সহ বহু স্বনামধন্য সংস্থায় কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। আন্তর্জাতিক পরিসরে তার কাজের বিস্তার ভারত, আফ্রিকার মালভি এবং ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও প্রযুক্তি খাতে তার বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি দীর্ঘদিন সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিওয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (স্রেডা) বোর্ড মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৫ সাল থেকে তিনি বায়োগ্যাস প্রযুক্তির উপর কাজ করেছেন এবং এই বিষয়ে দুটি মূল্যবান গ্রন্থও রচনা করেন। বায়োগ্যাস প্রযুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোক ও সংস্থাগুলোকে একত্রিত করার লক্ষ্যে তিনি ২০০৮ সালে ‘বাংলাদেশ বায়োগ্যাস ডেভেলাপম্যান্ট ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ফোরাম গঠন করেন। তিনি ইনষ্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের গবেষণা সেলের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ ছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বক্তাও ছিলেন। দেশে ও বিদেশে বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করে তিনি গবেষণামূলক পেপার উপস্থাপন করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, তিনি আমেরিকার এমআইটি (ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি) এবং যুক্তরাজ্যের স্ট্রেথক্লাইড বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
জীবদ্দশায় তিনি আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ভারত, চীন, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, হংকং, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ফিলিপাইন, কেনিয়া ও মালভি-সহ বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন।
এমএইচডি/বিআরইউ