জাকাতের অর্থআত্মসাৎ : সাঈদীসহ ৬ জনের বিচার শুরু

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে জাকাতের অর্থ আত্মসাতের মামলার অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এ অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলাটির আনুষ্ঠানিক বিচার কাজ শুরু হল।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা হোসনে আরার আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস, ইসলামী সমাজ কল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হক।
এদিন সকাল কারাগার থেকে সাঈদীকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাকে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলাটির আসামিদের মধ্যে একমাত্র দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী কারাগারে আছেন। আবুল কালাম আজাদ ও আব্দুল হক পলাতক। বাকি তিন আসামি জামিনে রয়েছেন।
গত ২৮ ডিসেম্বর মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আসামিপক্ষের আইনজীবীরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করতে না পারায় শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আবেদন আমলে নিয়ে বিচারক ১১ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামি দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর নেতৃত্বে পিরোজপুর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ ছিল। তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাকাত বোর্ডের অনুমোদন না নিয়ে এর অর্থ নিজ কর্মীদের মাঝে বণ্টন করেন।
তদন্তে কমিটি সরেজমিনে দেখতে পায়, মো. ফজলুল হক নামে এক ব্যক্তি পপুলার ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তিনি একজন জামায়াতকর্মী এবং বাড়ি পাকা দালান থাকেন। তাই শরীয়ত মোতাবেক তিনি জাকাত পাওয়ার যোগ্য নন। অথচ তাকে জাকাতের অর্থ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও অর্থ পাওয়া রহিমা খানম জামায়াতের রুকন, আমিরুল ইসলাম জামায়াতের আমির, মাওলানা হাফিজুর রহমান ইউনিয়ন সেক্রেটারি।
দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী জাকাতের অর্থ নিজে কর্মীদের মাঝে বিতরণ এবং নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন বলে তদন্তে উঠে আসে।
অভিযোগে আরো বলা হয়, পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলায় ২৫ জনের মধ্যে জাকাতের অর্থ বিতরণ করা হয়। এরমধ্যে ১১ জন নিজ গ্রাম ও ইউনিয়নের, আটজন পাড়েরহাট ইউনিয়নের, তিনজন প্রতিবেশী, তিনজনের ঠিকানা নেই। এভাবে সাঈদী দলীয় লোকের মধ্যে জাকাতের অর্থ বণ্টন করেন।
ওই ঘটনায় ২০১০ সালের ২৪ মে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক আইয়ুব আলী চৌধুরী জাকাতের ১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন। ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ গাজী ওয়াজেদ আলী মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
টিএইচ/এমএইচএস