বুয়েটে র্যাগিং : ৪ শিক্ষার্থী এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার

র্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) চার শিক্ষার্থীকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই ৪ জনসহ রিটকারী ৩৫ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। ফলে তারা কেউ আর বুয়েটের হলে থাকতে পারবেন না।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে জারি করা একাধিক রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
বহিষ্কৃত চার শিক্ষার্থী হলেন- মির্জা মোহাম্মদ গালিব, সব্যসাচী দাস দিব্য, সৌমিত্র লাহিড়ী ও মোবাস্বির। রায় প্রকাশের পর তারা এক সেমিস্টার পরীক্ষা দিতে পারবেন না। পাশাপাশি বুয়েটের হলেও থাকতে পারবেন না তারা।
এছাড়া র্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত এবং রিটকারী অন্য ৩১ শিক্ষার্থীও তাদের বাকি শিক্ষাজীবন বুয়েটের হলে থাকতে পারবেন না বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন আদালত। তারা হলের বাইরে নিজ দায়িত্বে থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘অপরাধের ধরন অনুযায়ী বুয়েটের দেওয়া শাস্তি পুনর্বিবেচনা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। যে ৪ শিক্ষার্থীকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে র্যাগিংয়ের ঘটনায় তাদের অপরাধ গুরুতর বলে মনে করেছেন আদালত। অন্য ৩১ জনও র্যাগিংয়ের ঘটনায় বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত ছিলেন। তাদের অপরাধ তুলনামূলক কম গুরুতর হওয়ায় একাডেমিক শাস্তি না দিয়ে কেবল হল থেকে বহিষ্কারের শাস্তি বহাল রাখা হয়েছে।’
রিট আবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে র্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে বুয়েটের বেশকিছু শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার এবং আবাসিক হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই শাস্তি দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা শাস্তির কপি হাতে পাওয়ার পর এর বিরুদ্ধে একাডেমিক কাউন্সিলে আপিল করেন। কিন্তু তা খারিজ হয়।
পরে এর বৈধতা নিয়ে ৩৫ শিক্ষার্থী হাইকোর্টে পৃথক রিট করেন। আজ সেই রিটের নিষ্পত্তি করা হলো।
আইনজীবীরা জানান, শিক্ষার্থীদের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় বুয়েট কর্তৃপক্ষ। আপিল বিভাগ হাইকোর্টকে এ সংক্রান্ত রুল এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন। আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে আজ রুল নিষ্পত্তি করেন হাইকোর্ট।
এমএইচডি/এসকেডি/জেএস