ইভ্যালির সম্পত্তি স্বনামধন্য ফার্ম দিয়ে অডিট করতে নির্দেশ

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৫ জানুয়ারি ২০২২, ০২:১৯ পিএম


ইভ্যালির সম্পত্তি স্বনামধন্য ফার্ম দিয়ে অডিট করতে নির্দেশ

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সব সম্পত্তি দেশের যেকোনো স্বনামধন্য অডিট ফার্মকে দিয়ে অডিট করাতে পারবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ইভ্যালির পরিচালনায় গঠিত বোর্ডকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

ইভ্যালির বোর্ডের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে ইভ্যালির বোর্ডের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোরশেদ আহমেদ খান। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন।

পরে ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকে আদালতে দুটি আবেদন উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে একজন গ্রাহক ইভ্যালির প্রডাক্টের পেমেন্ট না পাওয়াতে এই মামলায় পক্ষভূক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেন। কোর্ট তার আবেদনটি নথিভূক্ত করেছেন। আরেকটি আবেদন করা হয় ইভ্যালির বোর্ডের পক্ষ থেকে। ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর কোর্টের একটি আদেশ দিয়েছিলেন ইভ্যালিকে অডিট করবে কেপিএমজি নামে একটি কোম্পানি।

এই কোম্পানি অডিট করার জন্য ইভ্যালির কাছে ৮৬ লাখ টাকা চায়। এই অ্যামাউন্ট তারা কমাতে চায়নি। এ কারণে ইভ্যালির বোর্ড আদালতের কাছে আবেদন করে যেন অন্য কোনো অডিট ফার্মকে দিয়ে ইভ্যালির অডিট করানো যায়। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত আজ আদেশ দিয়েছেন দেশের যেকোনো স্বনামধন্য অডিট ফার্মকে দিয়ে ইভ্যালির বোর্ড তাদের সম্পত্তির অডিট করতে পারবেন।

এর আগে গত ১৮ অক্টোবর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করে দেন হাইকোর্ট।

বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, ওএসডিতে থাকা আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় গঠিত বোর্ড কী ধরনের কাজ করবে-সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
 
আদালত বলেছেন, লিখিত আদেশ পাওয়ার পরপরই তারা বোর্ড মিটিংয়ে বসবেন। কোথায় কী আছে, সবকিছু বুঝে নেবেন। কোম্পানি যেভাবে চলে, সেভাবে প্রথমে বোর্ড মিটিং বসবে। তাদের (বোর্ড) দায়িত্ব হলো টাকাগুলো কোথায় আছে, কোথায় দায় আছে, তা দেখা। 

অডিট লাগবে, বোর্ড অন্য কাজগুলোও দেখবে। এরপর সবকিছু করার পর বোর্ড যদি দেখে কোম্পানিটি চলার যোগ্যতা নেই, তখন অবসায়নের জন্য প্রসিড (প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া) করবে। কোম্পানির অবসায়ন চেয়ে আবেদনকারী আবেদন করেছেন। তখন আবেদনকারীর সঙ্গে বোর্ডও বলবে, কোম্পানিটি অবসায়ন করতে হবে। আর যদি বলে চালানো সম্ভব, তাহলে কোম্পানিটি চলবে।

জানতে চাইলে রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাসুম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বোর্ড শুরুতেই ইভ্যালির অবস্থা সম্পর্কে অডিট করবে। তাদের কাছে দায়-দেনার পরিমাণ হিসাব, কত অর্থ তাদের কাছে ভোক্তাদের পাওনা, তাদের কত সম্পদ আছে এই পুরো বিষয়টা অর্থাৎ কোম্পানিটি কী অবস্থায় আছে সেটার একটা খতিয়ান করতে হবে। এজন্য শুরুতেই অডিট করবেন তারা। 

তিনি বলেন, কোম্পানিটির যে দেনা রয়েছে, তা কীভাবে পরিশোধ করা যাবে, কোম্পানিটি আদৌ আর পরিচালনা করা সম্ভব, নাকি বন্ধ ঘোষণা করা উচিত, এসব বিষয়ে অডিটের পর বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। যদি কোম্পানিটি পরিচালনা করা সম্ভব হয়, তাহলে বোর্ড সেটি পরিচালনা করবে। পরিচালনা করা সম্ভব না হলে কোম্পানিটি অবসায়ন করে দেওয়া হবে। কোম্পানির নিয়মিত যেসব কাজ সেটি এ বোর্ড পরিচালনা করবে, এমনকি বাৎসরিক সভাও।
 
ব্যারিস্টার মাসুম আরও বলেন, যেহেতু ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং চেয়ারম্যান কারাগারে রয়েছেন তাই এ কোম্পানি পরিচালনা করতে যা যা করতে হয় তার সবই করবে এ বোর্ড।

এমএইচডি/জেডএস

Link copied