করোনার টিকা নিলেন সুপ্রিম কোর্টের ৫৫ বিচারপতি

করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনেই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের ৫৫ জন বিচারপতি টিকা নিয়েছেন।
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রধান বিচারপতি করোনার টিকা নেন। এছাড়া আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসাইন হায়দার, বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান; হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারসহ মোট ৫৫ জন বিচারপতি রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে করোনার টিকা নিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ঢাকা পোস্ট-কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আজ থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে গণটিকা প্রয়োগ কার্যক্রম। ঢাকাসহ দেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে একযোগে শুরু হয় এ কার্যক্রম।
সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনের পর ইতোমধ্যেই টিকা নিয়েছেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সচিব।
বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে তারা করোনার টিকা নিয়েছেন। বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিশিল্ড নামে টিকাটি। ভারত থেকে আনা এই ভ্যাকসিন ঘিরে বাংলাদেশে নানামুখী আলোচনা রয়েছে। এর জেরে টিকা নিতে মানুষের মাঝে কাঙ্ক্ষিত সাড়াও দেখা যায়নি বলে অনেকে মনে করেন।
আজ মন্ত্রীদের মধ্যে প্রথম টিকা নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর মহাখালীতে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গিয়ে টিকা নেন তিনি। টিকা নেওয়ার পর অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, ‘টিকা নেওয়ার পর আরও শক্তিশালী হয়ে গেছি। কোনো ধরনের সমস্যা বোধ করছি না’।
একই হাসপাতালে টিকা নেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি টিকা নেন। এ সময় গুজব ও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকতে জনগণকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
দুপুরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে সস্ত্রীক টিকা নেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। টিকা নেওয়ার পর তিনি বলেন, ‘আমি টিকা নিয়েছি, কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই’। সবাইকে টিকার বিরুদ্ধে অপপ্রচার থেকে দূরে থাকার অনুরোধ করেন তিনি।
দুপুর ১টায় সচিবালয়ে ‘সচিবালয় ক্লিনিক’-এ টিকা নেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। টিকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘অনুভূতি অন্যান্য টিকার মতোই। সকল পর্যায়ে টিকাদান ব্যবস্থাপনা সন্তোষজনক। মন্ত্রী-এমপিরা অনেকেই টিকা নিচ্ছেন, অপপ্রচারকারীরা ব্যর্থ হয়েছে।’ জনগণকে নির্দ্বিধায় টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
বেলা পৌনে ১১টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। টিকা নেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যেকোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। তবে এ ভ্যাকসিন নেওয়ার পর নিয়মানুযায়ী আধাঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। কোনোরকম সমস্যা অনুভব করিনি।’
এদিকে, সচিবদের মধ্যে প্রথম ধাপেই টিকা নিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে টিকা নেন তারা।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম জানান, টিকা নিতে ইতোমধ্যে তিন লাখ ২৮ হাজার জন নিবন্ধন করেছেন।
এমএইচডি/এফআর