ইউল্যাবের শিক্ষার্থীর মৃত্যু : আরেক আসামির রিমান্ড চায় পুলিশ

রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ‘ধর্ষণের পর হত্যার’ অভিযোগে করা মামলায় অজ্ঞাত আসামি সাফায়েত জামিলের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাজেদুল হক আসামিকে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট (ডিউব্লিউ) ইস্যুসহ রিমান্ডের এ আবেদন করেন। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসী আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি আসামিকে আদালতে হাজির করে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট (ডিউব্লিউ) ইস্যুসহ রিমান্ড শুনানির জন্য এ দিন ধার্য করেন।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে হলফনামা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন সাফায়েত জামিল। এরপর বিচারক জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
হলফনামায় সাফায়েত জামিল বলেন, গত ২৮ জানুয়ারি আমার বন্ধু আরাফাতের আমন্ত্রণে উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় প্রাইস টাওয়ারের ব্যাম্বু শুট রেস্টুরেন্টে যাই। রেস্টুরেন্টে আরাফাত ও তার পরিচিত অন্য বন্ধু মুর্তজা রায়হান চৌধুরী তার বান্ধবীকে নিয়ে আসেন। তাদের সঙ্গে আমার কোনো পরিচয় ছিল না। তারা হালকা নাস্তার পর মদপান করে চলে যান। আমি অসুস্থ বোধ করলে রেস্টুরেন্ট থেকে আমার বাসায় চলে যাই। দুদিন পর ৩০ জানুয়ারি আমার বন্ধু আরাফাত মারা যান। এরপর খবরের মাধ্যমে জানতে পারি, আরাফাতের বন্ধু মুর্তজা রায়হানের বান্ধবীও মারা গেছেন।
তিনি হলফনামায় আরও উল্লেখ করেন, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমার বাসায় অভিযান চালায়। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আরাফাতসহ চারজন ও অজ্ঞাতনামা একজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি উপলব্ধি করলাম, যেহেতু পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমার বাসায় অভিযান চালায় সেহেতু আমি অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে নিজেকেই সন্দেহ করছি। আমি নিজেকে এ মামলায় সম্পৃক্ত করতে ইচ্ছুক।
এর আগে, ৩১ জানুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভুইয়ার আদালত মর্তুজা রায়হান চৌধুরী ও নুহাত আলম তাফসিরকে পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ড শেষে বর্তমানে দুজন কারাগারে রয়েছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেয়, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আসামি আরাফাতের বাসায় যান। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বু শুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী (তরুণ) উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান। মদ্যপানের একপর্যায়ে তরুণী অসুস্থবোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নুহাত নামে একজনের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিলেন। তাদের চোখের সামনেই ধর্ষণ করা হয়।
ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খান কোকোকে ফোন দেন। সে বন্ধু পরদিন এসে ওই তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ওই তরুণী মারা যান।
টিএইচ/এফআর