অর্থ মানুষের সুখ বাড়িয়ে দেয়, দাবি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের গবেষণায়
টাকার সঙ্গে কী সুখের সম্পর্ক আছে— এমন প্রশ্নের নানা জবাব নানা জনের। কারো মতে, টাকা শুধু টাকার পরিমাণ বাড়ায়, মনের শান্তি আনে না। আবার অনেকের মতে, অর্থই অনর্থের মূল। কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন মত পোষণ করেন এমন মানুষও আছেন। যারা বলেন, টাকা দিয়ে সব সুখ কেনা যায়।
আলোচিত প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে গিয়ে নোবেলজয়ী এক অর্থনীতিবিদ ও তার সহকারীরা বেছে নিলেন শেষ মতটিই। অর্থাৎ তাদের মতে, অর্থ-প্রতিপত্তিই ব্যক্তিজীবনে সুখ বয়ে আনে।
তাদের গবেষণা বলছে, যথেষ্ট আয় এবং উপার্জন বাড়িয়ে তোলার সঙ্গে সুখের পরিমাণ বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল কাহনেম্যান, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় ও পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষক ম্যাথু কিলিংসওয়ার্থের একটি গবেষণালব্ধ ফল। আমেরিকায় ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী ৩৩,৩৯১ জন মানুষ, যাদের পারিবারিক আয় বছরে ৮ লাখের বেশি, তাদের নিয়ে এই সমীক্ষা করা হয়েছে।
গবেষণার পর দুটি বড় সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গবেষকরা। একটি হলো, বছরে বেশি আয়ের সঙ্গে সুখের যোগ রয়েছে। অপরটি হলো, মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ জানিয়েছেন, সম্পদ বাড়িয়ে তোলার সঙ্গে তাদের সুখের আহামরি কোনো পরিবর্তন হয়নি, জীবনযাত্রায়ও প্রভাব পড়েনি।
ওই গবেষণা ২০১০ সালের একটি গবেষণার বিরোধিতা করছে। যেখানে বলা হয়েছিল, অর্থ শুধু একটি পর্যায় পর্যন্ত সুখকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। সেক্ষেত্রে বার্ষিক আয় হতে হবে প্রায় ৬২ লাখ টাকা। এর আগে কাহনেম্যানের এই গবেষণার ফল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে, একটি ক্রেডিট কার্ড কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা তাদের কর্মচারীদের ন্যূনতম বেতনই বছরে ৬১ লাখ টাকা করেছিলেন। এমনকি, এর জন্য নিজেদের বেতনও কমিয়ে ফেলেন ঊর্ধ্বতনদের কয়েক জন।
এখন এই নতুন গবেষণাটি চলতি মাসে ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের কার্যপ্রণালীতে প্রকাশিত হয়েছে। তবে শেষে ‘বিধিসম্মত সতর্কীকরণ’ দিয়েছেন কিলিংসওয়ার্থ। তিনি একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘সুখের বহু নির্ধারক আছে। তার মধ্যে একটি হলো অর্থ। তবে অর্থই যে সুখের একমাত্র গোপন চাবিকাঠি, এমনটা নয়। তবে মানুষের জীবনে সুখ বৃদ্ধি করতে অনেকটাই সাহায্য করে অর্থ।’
/এসএসএইচ/
