ঐতিহাসিক স্থাপত্যের অজানা তথ্যের সম্ভার ‘আদাভান’
আমাদের আশেপাশে অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা আছে, যেগুলোর সঙ্গে আমাদের প্রতিনিয়ত দেখা-সাক্ষাৎ হয়। এগুলোর সঙ্গে আমরা এতটাই অভ্যস্থ হয়ে গেছি যে কখনো প্রশ্নই জাগে না এগুলো কী, কীভাবে এলো, কবে থেকে এখানে আছে। কিন্তু যখনই আমরা জানতে পারি তখনই মনে হবে এরকম একটা ঐতিহাসিক বিষয় এখানে আছে, আমরা কিছুই জানি না!
কত আগে থেকে যুগের পর যুগ কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যেমন ধরেন, বর্তমান শাহবাগ প্রকৃতপক্ষে ছিল একটি বাগানবাড়ি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনটি ছিল নবাবদের নাচঘর, ঢাকা গেটটি আমরা প্রতিদিন দেখছি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জানিনা যে এটা ঢাকা গেট। রয়েছে পরি বিবির হাম্মামখানা, শাহবাগের বাগানবাড়ী, বাদশাহি বাগান তথা রমনা পার্কের ঐতিহাসিক বর্ণনা। ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাচারিতায় এ বিষয়গুলো তুলে ধরেন ‘আদাভান’ উপন্যাসের লেখক তৌহিদ সিজার।
অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ -এর নতুন লেখকদের বইয়ের মধ্যে যেগুলো পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে তারমধ্যে অন্যতম তৌহিদ সিজারের ‘আদাভান’।
আলাপচারিতায় আরও জানা যায়, ‘আদাভান’ মূলত উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম। যার রয়েছে একজন আধ্যাত্মিক গুরু। তার কাজকর্মেও প্রচুর মিল রয়েছে গুরুর সঙ্গে। মিল রয়েছে পোশাক এবং চলাফেরায়। তার জীবনযাপনে একদিকে রয়েছে ছন্নছাড়া ভাব ও বৈষয়িক ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীনতা, আচরণে বেখেয়ালি। মানুষের ধারণা তারও রয়েছে আধ্যাত্মিক ক্ষমতা। উপন্যাসে তাকে কেন্দ্র করেই ঘটতে থাকে বিভিন্ন রকম চমকপ্রদ ঘটনা।
গল্পের প্রয়োজনে হৃদয়গ্রাহীভাবে উঠে এসেছে বিখ্যাত সাহাবা আবু হুরায়রা (রা.) এবং নবী রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি ঘটনা, সনাতন ধর্মের ভগবান শ্রী কৃষ্ণ ও কৃষ্ণচূড়ার সম্পর্ক, কচুরিপানার কারণে বাংলার অর্থনৈতিক মন্দা। পার্শ্ব চরিত্রের মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ জন মিল্টন, নুরুদ্দিন, আব্দুল মজিদ।
গল্পে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি, অনাচার, অন্যায়কে তুলে ধরে প্রতিবাদ করা হয়েছে। উঠে এসেছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী, আমাদের মা বোনদের ওপরে যে পৈচাশিক নির্যাতন করেছে তার অত্যন্ত হৃদয়বিদারক বর্ণনা। অত্যন্ত সুন্দর ও সুকৌশলে তুলে ধরা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর দাফন, রবীন্দ্রনাথের বিয়ে ও শ্বশুড়বাড়িসহ বেশ কিছু ঘটনা। রয়েছে প্রেম ভালোবাসা ও টানাপোড়েন। গল্পের সমাপ্তিটা একদমই অপ্রত্যাশিত যা পাঠকদের আকর্ষিত করে।
এসআর/এসএম