‘বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামমুখর জীবন নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু’ নামের সংকলন গ্রন্থ। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা দেশের ৭৫ জন লেখক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের রচনায় সমৃদ্ধ বইটি সম্পাদনা করেছেন কবি আসাদ চৌধুরী।
বইটি যৌথভাবে প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ, রাশিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও বেসরকারি ব্যাংক এনআরবিসি।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন।
# বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অবিচ্ছেদ্য : স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী
# বঙ্গবন্ধু ছিলেন মানবতাবাদী বিশ্ব নেতা : ড. মসিউর রহমান
# বঙ্গবন্ধু স্বনির্ভর অর্থনীতির স্বপ্ন দেখতেন : পারভেজ তমাল
রাশিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমালের সভাপতিত্বে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কবি আসাদ চৌধুরী, বইটির নির্বাহী সম্পাদক ড. নুরুন নবী, এনআরবিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু প্রমুখ। এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালক একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, এনআআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়াসহ বিভিন্ন ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় গণমাধ্যম ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পাঁচ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করে এনআরবিসি ব্যাংক।
বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছেন দেশ-বিদেশের এমন বিশিষ্ট ৭৫ জন গুণীব্যক্তির লেখায় সমৃদ্ধ হয়েছে বইটি। বইটির সম্পাদনায় করেছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী, কবি আসাদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী, পারভেজ তমাল ও ড. আমিনুর রহমান সুলতান। অমর্ত্য সেন, সৈয়দ শামসুল হক, রেহমান সোবহান, আনিসুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, নির্মলেন্দু গুণের মতো প্রথিতযশা লেখকরা লিখেছেন। তাদের লেখার মূল উপজীব্য বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ, দর্শন, জাতির প্রতি বঙ্গবন্ধুর দিক নির্দেশনা, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে তার জীবন ও কর্ম নিয়ে অনেক লেখাই প্রকাশিত হচ্ছে, এটি আমাদের জন্য আনন্দের। বঙ্গবন্ধু এ দেশের মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য অংশ। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই তার জীবনের মূল দর্শন ছিল। ১৯৪৮ সাল থেকে স্বাধীনতা পর্যন্ত গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলো পড়লে স্বাধীনতার প্রতিটা আন্দোলনেই বঙ্গবন্ধুর সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। এসব ঘটনা পরম্পরায় তিনি বঙ্গবন্ধু থেকে হয়ে উঠেছিলেন বিশ্ববন্ধু। আশা করছি ভবিষ্যতে বইটি অন্য ভাষাতেও অনূদিত হবে।
ড. মসিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন মানবতাবাদী বিশ্ব নেতা। তার মানবিক গুণ দিয়ে মানুষকে মুগ্ধ করতেন। যখন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন তখন রাজনীতির সঙ্গে বুদ্ধিজীবীর সম্পৃক্ত করেন। তিনি বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের উপর জোর দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আর্থিক কর্মকাণ্ডের বাইরে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে লেখা বইটি সংকলন করায় এনআরবিসি ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার মহান চিন্তা-চেতনা লেখনীর মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে হবে।
গ্রন্থটির সম্পাদনা পর্ষদের সদস্য কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, লেখার মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানাদিক নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াসেই ‘বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু’ বইটি সংকলিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি এস এম পারভেজ তমাল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু’ বইটিতে জাতির পিতার জীবন, রাজনৈতিক আদর্শ ও দর্শনের পাশাপাশি জাতির জন্য তার দিকনির্দেশনার নানা দিক উদ্ভাসিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্বনির্ভর অর্থনীতির স্বপ্ন দেখতেন।
পারভেজ তমাল বলেন, প্রান্তিক মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করছে এনআরবিসি ব্যাংক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনারবাংলা গড়তে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক প্রথাগত ব্যাংকিং কার্যক্রমের বাইরে শিল্প-সাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস নিয়ে কাজ করছে। এটি সত্যই অনন্য উদাহরণ। এনআরবিসি ব্যাংক তার কার্যক্রমের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে।
অনুষ্ঠানে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন, সৃজনশীল গণমাধ্যমের জন্য আরটিভি, বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যমের জন্য একাত্তর টিভি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হিসেবে ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের উন্নতির জন্য এসকেএস ফাউন্ডেশনকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু ও এসকেএস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী রাসেল আহমেদ লিটনকে ক্রেস্ট ও উত্তরীয় প্রদান করা হয়।
এসআই/এইচকে