সাংবাদিক আবু আজাদকে মারধর, জড়িতদের বিচার দাবি সিপিজের
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিক আবু আজাদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছে বিশ্বব্যাপী সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। একইসঙ্গে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে ঘটনার দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার দেয়া এক বিবৃতিতে এমন দাবি করেছে সংগঠনটি।
আবু আজাদ ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের স্টাফ করেসপনডেন্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
এর আগে গত রোববার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর নির্দেশে ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার মোহন অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি এবং মারধর করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী সাংবাদিক আজাদের।
ঘটনার পর সাংবাদিক আবু আজাদের সঙ্গে কথা বলেছে সিপিজে। এবং তার মুখ থেকে পুরো ঘটনা শুনেছে সংগঠনটি।
একইসঙ্গে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে সিপিজে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদারের কাছে মেসেজ পাঠানো হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি। একই ধরণের বার্তা পাঠানো হয় অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ চৌধুরীর কাছেও। তিনিও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু আজাদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধ ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে আমি রোববার সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের মঘাছড়িতে পৌঁছাই। সড়কের পাশে মাটি তুলে নামহীন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার (মোহন) ৫-৬ লোক নিয়ে এসে আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারধর করেন। এরপর আমাকে একটি মাইক্রোবাসে করে মঘাছড়ি বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে প্রকাশ্যে আমার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে আবার মারধর করে। এরপর তার কার্যালয়ে নিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে। আমার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও আইডি কার্ড কেড়ে নেয়। বিকাশ থেকে টাকা তুলে নেয়। আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরে আমি অফিসের নম্বর দিয়ে তাদের যোগাযোগ করতে বলি।
আবু আজাদ আরো বলেন, মারধরের এক পর্যায়ে মোহনের মোবাইল ফোন দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আমার সঙ্গে কথা বলেন। আমার পরিচয় জানার পর তিনি আমাকে বলেন, এ রকম সাংবাদিক মেরে ফেললে কিছু হবে না। এরপর আমার মোবাইল দিয়ে গুগল ড্রাইভে ঢুকে সব ছবি-ভিডিও ডিলিট করে দেয় এবং মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলে। মোহন আমার পকেটে তার ভিজিটিং কার্ড ঢুকিয়ে দিয়ে ক্ষমতা থাকলে কিছু করতে বলে। আমাকে ছেড়ে দিলে আমি রাঙামাটি মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসা নিই। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছি।
ঘটনার পর বিবৃতিতে সিপিজে বলেছে, সাংবাদিক আবু আজাদকে অপহরণ এবং নির্যাতনের ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে।
এমজে