বাংলাদেশে সাংবাদিকদের সুরক্ষার আহ্বান সিপিজেসহ তিন সংস্থার
বাংলাদেশে সাংবাদিকদের সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। এছাড়া রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও এশিয়ান লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টার— যৌথভাবে এক প্রতিবেদনে এ আহ্বান জানায়।
জাতিসংঘের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর) ওয়ার্কিং গ্রুপের ৪৪তম অধিবেশনের জন্য পাঠানো প্রতিবেদনে এ আহ্বান জানায় আন্তর্জাতিক তিনটি সংস্থা।
গত বুধবার সিপিজে নিজস্ব ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের বেআইনিভাবে আটক, হয়রানি করা হয়। এছাড়া বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে সাংবাদিকদের স্তব্ধ করার ক্রমবর্ধমান চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এদিকে আগামী নভেম্বরে ইউপিআরের ওই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে সাংবাদিকদের হত্যা ও অপহরণ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার তথ্য, কারা হেফাজতে গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর নিপীড়ন ও কারাগারে লেখক মুস্তাক আহমেদের প্রসঙ্গ রয়েছে। আটক, হয়রানি ও সরকার সমালোচক প্রবাসী সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
দীর্ঘ এই প্রতিবেদনে অনুচ্ছেদ ৭১টি রয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে উদ্বেগজনক মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে সিপিজে, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস সেন্টার ও এশিয়ান লিগ্যাল সোর্স। এর মধ্যে রয়েছে সুশীল সমাজের কাজের পরিধি সংকুচিত হওয়া, নির্বাচনের আগে মানবাধিকার সংগঠন, নাগরিক সংগঠন, সাংবাদিক ও বিরোধীদের লক্ষ্যবস্তু করা এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালেও একইভাবে সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এটি আমলে নেয়নি। এছাড়া ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আগের নির্বাচনের মতো ক্ষমতাসীন দল সুশীল সমাজের কাজের পরিধি সংকুচিত করেছে। এছাড়াও রাজনৈতিক দমন ও সহিংসতা বাড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে, এর মধ্যে—গুম, অপহরণ, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যুর সব অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা। পরিস্থিতির শিকার, তাদের পরিবার এবং স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে এই কমিশন গঠন করতে হবে। মানবাধিকার সংগঠন, নাগরিক সংগঠন ও সাংবাদিকদের সব ধরনের হয়রানি ও তাদের ওপর আক্রমণ বন্ধ করা।
সুপারিশে, এ সব ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বিরোধী নেতা-সমর্থকদের বেআইনি গ্রেপ্তার, ও তাদের ওপর আক্রমণ বন্ধ করা। পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়।
এমএসএ