তথ্যমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ডিআরইউ কমিটির মতবিনিময়
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসানের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত কমিটি।
রোববার (১০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানাই। এ সংগঠনটি ঢাকা শহরের সকল রিপোর্টারদের একটি সংগঠন। এখানে কোনো রাজনৈতিক বিভাজন নেই, এটি সবচেয়ে বড় কথা। সাংবাদিকদের বহু সংগঠনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিভাজন আছে, কিন্তু এ সংগঠনে সেটি হয়নি; আশা করছি কখনো হবেও না।'
রিপোর্টারই সংবাদমাধ্যমের প্রাণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারাই সংবাদ সংগ্রহ করেন। রিপোর্টাররা যদি সঠিকভাবে রিপোর্ট না করেন তাহলে সংবাদমাধ্যমে সঠিক সংবাদ পরিবেশিত হবে না। সেজন্য যারা মাঠে-ময়দানে খেটে রিপোর্ট করেন, তাদের অবদান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা সেটি করছেন। বেস্ট রিপোর্টিংয়ের জন্য ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি থেকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। আমি এজন্য ধন্যবাদ জানাই। এটি অব্যাহত রাখার জন্য আমি অনুরোধও জানাচ্ছি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একজন রিপোর্টার অব্যক্তদের পক্ষে কথা বলতে পারেন। যার কাছে ক্ষমতা নেই তার পক্ষে কথা বলে তাকে ক্ষমতাবান করতে পারেন। দায়িত্ববান অনেকেই অনেকদিকে দৃষ্টিপাত করেন না। সেগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করাতে পারেন একজন রিপোর্টার। আপনারা সে কাজগুলো করে চলেছেন এবং অনেক ভালো রিপোর্ট হয়। সেগুলো যারা করেন তাদের পুরস্কৃতও করা হয়। যারা কাজগুলো করছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সঙ্গে অনেক আগে থেকেই সম্পর্ক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যখন আমি মন্ত্রী ছিলাম না তখনও চেষ্টা করেছি সহায়তা করার। আর এখন তো আমার দায়িত্বের মধ্যে চলে এসেছে সহায়তা করা। গত এক বছর করোনাকালে আমি পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এ সময়ে রিপোর্টার্স ইউনিটিও ভালো কাজ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন কমিটির সবাই তরুণ। রিপোর্টাররা সাধারণত তরুণই হয়। আপনাদের এ কমিটির মাধ্যমে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি নতুন উচ্চতায় উন্নিত হবে বলে আমি আশা প্রকাশ করছি।’
‘আমি একটি আবেদন আপনাদের কাছে রাখব। একটি সামাজ বা রাষ্ট্রকে সামনের দিকে যদি এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় তাহলে একটি আশা থাকতে হয়। আশাহীন মানুষও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে না। সামাজ বা রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও সেটিই বাস্তবতা। আমাদের সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি যেমন তুলে ধরতে হবে একইসঙ্গে মানুষকে আশান্বিত করার জন্য রাষ্ট্র যে আজকে এগিয়ে যাচ্ছে, সে বিষয়টিও আপনাদেরকে তুলে ধরার জন্য অনুরোধ জানাই। তাহলেই কিন্তু আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই সবার সম্মিলিত লক্ষ্য’, বলেন ড. হাছান মাহমুদ।
প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান বলেন, ‘ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত কমিটি, তরুণ নেতৃত্ব। যাদের মধ্যে অদম্য উদ্দীপনা রয়েছে। আপনাদের গতিশীল নেতৃত্বের মধ্যে দিয়ে যে লক্ষ্য আছে তা পূরণ করতে সক্ষম হবেন বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করছি। বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারবেন বলেও আমি মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা সূচিত হয়েছে তা যেন গণমাধ্যমে আরও জোরালোভাবে উপস্থাপন হয়, সে অনুরোধ জানাচ্ছি। তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি আমাদের সকল সহযোগিতা থাকবে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’
সংগঠনের দুই সদস্য সাগর-রুনি হত্যার বিচার ত্বরান্বিত করতে এ সময় মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন মুরসালিন নোমানী। দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে বলে আমি আমরা আশা করছি।’
সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান বলেন, ‘ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করে। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পেয়ে এসেছি, ভবিষ্যতেও পাব বলে আশা করছি।’
মতবিনিময় সভায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি ওসমান গনি বাবুল, যুগ্ম-সম্পাদক আরাফাত দাড়িয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, অর্থ সম্পাদক শাহ আলম নূর, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক হালিম মোহাম্মদ, ক্রীড়া সম্পাদক মাকসুদা লিসা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিজান চৌধুরী, আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ নইমুদ্দীন, কল্যাণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- কার্যনির্বাহী সদস্য এমএম জসিম, আজিজুর রহমান (রহমান আজিজ), রোমানা জামান, রফিক রাফি, নার্গিস জুঁই ও জাহাঙ্গীর কিরণ।
এসএইচআর/এইচকে