‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়াতে বজলুর রহমান স্মৃতিপদক গুরুত্বপূর্ণ’
‘বজলুর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য বজলুর রহমান স্মৃতিপদক প্রদান অত্যন্ত সময়োপযোগী।’
‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতায় যারা কাজ করছেন, তারা জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে সাংবাদিকদের উদ্বুদ্ধকরণে বজলুর রহমান স্মৃতিপদক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
রোববার (৩১ অক্টোবর) মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্যোগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বজলুর রহমান স্মৃতিপদক-২০২০ প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এসব কথা বলেন।
এ সময় ‘সংবাদ’ পত্রিকার প্রয়াত সাংবাদিক বজলুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান স্পিকার।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য ‘বজলুর রহমান স্মৃতিপদক-২০২০’ লাভ করেছেন সাংবাদিক মো. মামুন চৌধুরী, সাংবাদিক রাজন ভট্টাচার্য এবং সাংবাদিক শাহনাজ শারমিনের নেতৃত্বে নাগরিক টিভি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতায় বজলুর রহমান স্মৃতিপদক পেল ‘নাগরিক’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতায় ‘বজলুর রহমান স্মৃতিপদক-২০২০’ পাওয়ায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে নাগরিক টেলিভিশনের মাসব্যাপী কর্মযজ্ঞের স্বীকৃতি মিলল।
আমন্ত্রিত অতিথিরা বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণে, নাগরিক টেলিভিশনের রিপোর্টিং অনুসরণ করার মতো। গত ডিসেম্বরে নাগরিক টেলিভিশন টানা ৩১ পর্বে তুলে আনে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা জাতির বীর সেনাদের অজানা সব গল্প। মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের জীবন্ত স্মৃতি। যা দেশের প্রতিটি মানুষকে উজ্জীবিত করে।
অতিথিরা বলেন, এমন উদ্যোগ অসাম্প্রদায়িক দেশ নির্মাণে উদাহরণ হতে পারে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ব্যবস্থাপনায় বজলুর রহমান স্মৃতিপদক জুড়ি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, নাগরিক টিভির উদ্যোগে তুলে আনা হয় জাতির বীর সন্তানদের দুঃখ, সুখ, হতাশা আর প্রত্যাশার কথা। যা বিশেষ মনে করেছেন পদক সংক্রান্ত জুড়ি বোর্ড।
পদক প্রদান অনুষ্ঠানে স্পিকার বলেন, সাংবাদিক বজলুর রহমান একজন দেশপ্রেমিক, মুক্তিযোদ্ধা, নিরহংকারী মানুষ ছিলেন। তিনি অজ্ঞতা, অন্যায় ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। সুস্থ ও সচেতন সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকতাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তিনি তা শিক্ষা দিয়ে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে তিনি ছিলেন সদা সোচ্চার। তার জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা চর্চা করতে হবে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যার পর এ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপপ্রয়াস চালানো হয়। তাই স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা সকলের কর্তব্য। সংবাদকর্মীরা নিয়মিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ সংগ্রামী জীবন, মহান শহীদদের আত্মত্যাগ এবং স্বাধীনতার চেতনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিবিড় গবেষণার মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরি করছেন, যা বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত করে চলেছে।
স্পিকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের কথা বলে গেছেন। বর্তমান সরকার সবসময়ই দায়িত্বশীল ও জনকল্যাণকর সাংবাদিকতার পক্ষে। গণমাধ্যম এখন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। বস্তুনিষ্ঠ সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে গণমাধ্যম গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে তোলে। গণমাধ্যম মানুষকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে। তাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি দায়িত্বশীলতার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী স্বাগত বক্তব্য রাখেন। জুরিবোর্ডের সদস্য নওয়াজেশ আলী খান ও রোবায়েত ফেরদৌস অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানের বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
এইউএ/পিএসডি/এইচকে