অন্যদেরও টিকা নিতে বলছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

সচিবালয়ে অবস্থিত ক্লিনিকে প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও করোনার টিকা নিচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। টিকা নেওয়ার পর অন্যদেরও নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয় ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, উৎসাহ নিয়ে টিকা নিচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। টিকা নেওয়ার পর ১০ থেকে ২০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ফের কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন তারা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব সোনিয়া মুন্নি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘টিকা নিলাম। কারণ আমি মনে করি এটা আমাদের নেওয়া উচিত। এটাই ফাইট করার জন্য এখন বেস্ট ওয়ে। আমি নিজে নিয়েছি এবং যারা এখনো নেননি তাদেরকে বলব টিকা নিতে, এখন আমাদের টিকা নেওয়ার সময়।’
টিকা নেওয়ার পর কেমন অনুভব হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে যেকোনো ইনজেকশন পুশ করার পর জায়গাটা হালকা ফিল হয়ে, ওটাই। এছাড়া আলাদা কোনো সমস্যা নেই। আমি অফিস থেকে এসেছি এবং এখান থেকে গিয়ে আবার অফিস করব।’
অতিরিক্ত সচিব নাজমা মোবারক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘টিকা নেওয়ার পর কোনো সমস্যা অনুভব করছি না।’ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অফিস সহকারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘টিকা নেওয়ার পর আমার কোনো সমস্যা বা অসুবিধা হচ্ছে না। সবাইকে বলব টিকা নেওয়ার জন্য।’
রোববার থেকে সচিবালয় ক্লিনিকে করোনার টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিন ১৬৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী টিকা নেন। দ্বিতীয় দিনেও টিকা নিতে আসছেন সচিবালয়ে কর্মরতরা।
বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সেলিম আবেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমি টিকা নিতে যাচ্ছি, আশা রাখি কোনো সমস্যা হবে না।’
রোববার এ ক্লিনিক থেকে টিকা নিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান।
সচিবালয় ক্লিনিকের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিদিন ৩০০ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সচিবালয় ক্লিনিকে মোট ১২ দিন চলবে এ কার্যক্রম।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রোববার সারাদেশের এক হাজার ৫টি কেন্দ্রে একযোগে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। কর্মসূচির উদ্বোধনের পর এরইমধ্যে টিকা নিয়েছেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সচিব। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে করোনার টিকা নেন তারা।
রোববার মন্ত্রীদের মধ্যে প্রথম টিকা নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর মহাখালীতে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গিয়ে টিকা নেন তিনি।
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এদিন করোনার টিকা নেন।
এছাড়া সোমবার টিকা নিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।
সচিবদের মধ্যে রোববার টিকা নেন- মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম।
এসএইচআর/জেডএস