টাকা সাদা করার নামে ঘুষ বৈধ করা গ্রহণযোগ্য নয়

কালো টাকা সাদা করার নামে ঘুষের টাকা বৈধ করা গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১৯ নিয়ে আলোচনার সময় তিনি এমন মন্তব্য করেন। ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠিত আলোচনায় দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান ও এ এফ এম আমিনুল ইসলাম যুক্ত ছিলেন। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে ওই বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কালো টাকা সাদার নামে ঘুষের টাকা বৈধ করা গ্রহণযোগ্য নয়। ঘুষের টাকা সাদা করবেন এটা অনৈতিক এবং বিব্রতকর।
চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ হাজার ৯৩৮ জন করদাতা জমি, অ্যাপার্টমেন্ট, নগদ, ব্যাংক আমানত এবং অন্যান্য সম্পদ বৈধ করেছেন। সম্পদ বৈধ করার মাধ্যমে রাজস্ব এসেছে প্রায় ৮৮৫ কোটি টাকা। আর শেয়ারবাজারে প্রায় ২২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করেছেন ১৮৮ জন ব্যক্তি।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত দুর্নীতি বিদ্যমান, এতে কোনো সন্দেহ নেই। দেশের দুর্নীতির ব্যাপকতা রোধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। ২০১৯ সালে আমরা স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে ড্রাইভ শুরু করি। কারণ সাসটেইনেবল গোল পূরণে এই দুই খাতের দুর্নীতি রোধ করা দরকার ছিল।
দুর্নীতির অন্যতম খাত রাজস্বখাত। এটা খুবই কঠিন এবং জটিল। এটা সহজ হলে সবাই ট্যাক্স দেবে। জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেই তার ট্যাক্স ফাইল থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন ইকবাল মাহমুদ।
২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যখাত, নদী দখল, ওয়াসাসহ সরকারি ১৪টি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি চিহ্নিত করে, তা বন্ধে সুপারিশ করেছে দুদক। রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা বার্ষিক প্রতিবেদনে দুদকের পক্ষ থেকে সরকারি চাকরিতে সব পদোন্নতিতে পরীক্ষা প্রচলনের পাশাপাশি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ ক্যাডার থেকে নিয়োগের সুপারিশ করে দুদক।
বার্ষিক প্রতিবেদনে ২০১৯ সালে সাজার হার ৬৩ শতাংশ বলে দাবি করা হয়। এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে দুদকে মোট অভিযোগ আসে ২১ হাজার ৩৭১টি, অনুসন্ধানের জন্য নেওয়া হয় ১ হাজার ৭১০টি অভিযোগ। একই বছরে মোট মামলা হয় ২৬৩টি, আর মামলার চার্জশিট জমা হয়েছে ২৬৭টি।
এ প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, গত বছরের তুলনায় ২০১৯ সালে মামলা এবং চার্জশিটের পরিমাণ কিছুটা হলেও বেড়েছে। মামলা এবং চার্জশিটের গুণগত মান নিশ্চিত করার কারণেই কমিশনের মামলায় সাজার হার ৬৩ শতাংশ হয়েছে। আমরা চাই কমিশনের মামলায় সাজার হার হবে শতভাগ। তবে আশার কথা আমরা যতটা জেনেছি ২০২০ সালে শুধু কমিশনের মামলায় সাজার হার ৭৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত সামাজিক আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। দুদক এক্ষেত্রে প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।
আরএম/জেডএস