দ্বিতীয় স্ত্রীকে ‘শিক্ষা’ দিতেই শিশুদের গায়ে আগুন দেন আলাউদ্দিন

রাজধানীর আদাবর থানার শনিরবিল হাউজিংয়ের প্রেমগলিতে দুই শিশুর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে আদাবর থানা পুলিশ। দ্বিতীয় স্ত্রীকে ‘শিক্ষা’ দিতেই তিনি এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা সাতটায় তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার।
তিনি জানান, আলাউদ্দিন পেশায় একজন রিকশাচালক। তার দুই বউ পাশাপাশি বাড়িতে থাকেন। প্রথম স্ত্রীর তিন সন্তান, দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান নেই। আলাউদ্দিনের সন্দেহ হয়, দ্বিতীয় স্ত্রী মৌয়ের অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্ক আছে। এটি তার ধারণা, এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ তৈরি হয় এবং আলাউদ্দিন তার স্ত্রীকে মারপিট করেন।
আলাউদ্দিনের প্রথম স্ত্রী এবং দ্বিতীয় স্ত্রী দুজনেই গার্মেন্টসের চাকরি করেন। মঙ্গলবার সকালে মৌয়ের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আদাবর এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে ছোট দুই ভাই-বোন মিতু ও বাপ্পিকে প্রথম স্ত্রীর বাসায় নিয়ে আসেন। সে সময় বাসায় কেউই ছিলেন না। দুই শিশুকে গালিগালাজ ও মারপিট করেন আলাউদ্দিন। এক পর্যায়ে শিশুদের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার জানান, আগুন লাগিয়ে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দেওয়া হয়। চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল সেখান থেকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, ঘটনা জানার পর আমি আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দিই। এ ঘটনায় দগ্ধ শিশুদের বোন আদালত থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি ঘটার পর থেকেই আমরা বিভিন্ন সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করি। বুধবার দুপুরে আদাবর থানার একটি টিম সাভারের বৈলাপুর এলাকা থেকে আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলাউদ্দিন পুলিশকে জানান, মৌয়ের ওপর প্রতিশোধ নিতেই তিনি শিশুদের ওপর কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলে তার কাছ থেকে আরও তথ্য জানা যাবে।
এসএএ/আরএইচ