ইউপি নির্বাচন মে মাসের মাঝামাঝি

মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা। আজ (বৃহস্পতিবার) নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব ও আরএফইডির সভাপতি সোমা ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী জেবেলসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘চতুর্থ ধাপের পৌর ভোট ১৪ ফেব্রুয়ারি আর পঞ্চম ধাপের ভোট ২৮ ফেব্রুয়ারি। ৭ এপ্রিল আরেকটি পৌরসভা নির্বাচন হবে, একইসঙ্গে কিছু ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রমজান মাসে নির্বাচন হবে না। মার্চ মাসেও কোনো নির্বাচন হবে না, একমাস আমাদের ছুটিতে যেতে হবে। কারণ, আমাদের ভোটার তালিকা তৈরি করা, সেটা চূড়ান্ত করা, তালিকার সিডি করে প্রার্থীদের দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ডিজিটাল যুগের ব্যবস্থাপনা আমাদের অনেক দূরে নিয়ে গেছে। এখন কেউ ভুয়া ভোট দিতে পারে না। এবার কয়েকজন ভুয়া ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তাদের সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কারণ, সিডি চেক করলে সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের ছবিসহ সব দেখা যায়। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন সিডি ছিল না, ফলে কেউ চাইলেই ভুয়া ভোট দিতে পারত। তাই সিডির কাজের জন্য মার্চে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। এপ্রিলে একটা নির্বাচন করব। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরু হবে।’
দেশের প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালে ২২ মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ছয় ধাপে চার হাজারেরও বেশি ইউপির ভোট হয় দলীয় প্রতীকে। এবারও দলীয় প্রতীকে ভোট হবে।
সিইসি বলেন, ‘এখনও সব নির্বাচনে সংঘাত হয়। এগুলো চলে গেলে খুশি হব। আজকেও আমরা চট্টগ্রাম, যশোরে কথা বলেছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘১৪ তারিখ ভালোবাসা দিবসের নির্বাচনকেও ভালোবেসে ফেললাম। আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনার দিক দিয়ে যা যা দরকার আমরা সব ঠিকঠিকভাবে দেখেছি। আমি আশা করি অন্তত এরপর থেকে যে নির্বাচন হবে ভালো হবে, সুষ্ঠু হবে ও সংঘাত-সংঘর্ষ হবে না।’
‘বিগত নির্বাচনগুলোতে রক্তপাত, সহিংসতা কেন ঠিক করা গেল না? আগামীতে কিভাবে সামাল দেবেন’- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এত রক্তপাত হয়েছে, এত সংঘাত হয়েছে তা না। যেগুলো হয়েছে আমাদের কাম্য নয়। ইসির পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ থাকে। কিন্তু একটা ঘটনা ঘটে গেলে তো কিছু করার থাকে না। প্রচুর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকে, ম্যাজিস্ট্রেট থাকে। তারপরও কিছু কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যায়। প্রার্থী ও প্রার্থীদের সমর্থকদের সহনশীল থাকতে হবে, আর আমাদের প্রচেষ্টা তো আছেই। তবে এটাকে ঢালাওভাবে বলবেন না, ব্যাপকভাবে হয়েছে তা নয়। সারা নির্বাচনের মধ্যে তিন-চারটি জায়গায় এমন হয়েছে। আমরা সেটাকে সামাল দিয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে যেখানে অসুবিধা হয়েছে, সেখানে পুলিশি মোকদ্দমা করেছে। ইসির পক্ষ থেকে প্রত্যাশা ও প্রস্তুতি থাকবে এগুলো যাতে না হয়।’
‘আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর জন্য কোনো বার্তা আছে কি-না’ জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘আমরা তাদের অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় রাখি। প্রত্যেকটি জায়গায় র্যাবের সদস্য, বিজিবি, আনসার আছে। প্রত্যেকটা কেন্দ্রে ১২ থেকে ১৮ জন আর্মড পুলিশ এবং আনসার নিয়োজিত থাকবে। তাদের সাথে নির্বাচন কমিশনাররা কথা বলেছেন। তারা আরও সুষ্ঠুভাবে তদারকি করবে। আগামী ১৪ তারিখ যে নির্বাচন আছে সেগুলো তারা মনিটর করবে। কোনো জায়গায় খারাপ খবর পেলে কমিশনাররা কথা বলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবেন।’
এসআর/এইচকে