গরমে গাড়িতে বসে থাকতেও অসহ্য লাগছে

মূল সড়কে গাড়ির আর সংযোগ সড়কে রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশার দীর্ঘ সারি। এক মিনিট গাড়ি চললে পরের বিশ মিনিট বসে থাকতে হচ্ছে। সবগুলো সড়কেই গাড়ির তীব্র চাপ। অসহায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরাও। রোজা রেখে রোদ, গরম সহ্য করেই চেষ্টা করছেন সড়ক নিয়ন্ত্রণের। সাধারণ মানুষজনের অবস্থাও একই। সবমিলিয়ে যানজটে নাকাল অবস্থা রাজধানীর মানুষের। নিরুপায় হয়ে অনেকেই আবার পায়ে হেঁটেই ছুটছেন গন্তব্যের দিকে।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, এলিফ্যান্ট রোড, বাটা সিগন্যাল, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত এলাকা ঘুরে অসহনীয় যানজটে মানুষের চরম ভোগান্তির এমন চিত্রই চোখে পড়ে।
সরেজমিন দেখা যায়, মহাসড়ক ও সংযোগ সড়কে গাড়ির অতিরিক্ত চাপ থাকার ফলেই যানজটের দুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে। সংযোগ সড়ক থেকে মূল সড়কে ও মূল সড়ক থেকে সংযোগ সড়কে গাড়ি প্রবেশ করাতে বারবার বন্ধ করতে হচ্ছে মূল সড়কের যানচলাচল। যার ফলে তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ গাড়ির জট। এক সিগন্যালেই পার করতে হচ্ছে পনের থেকে বিশ মিনিট সময়। সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঝিগাতলা হয়ে শাহবাগ যাওয়ার জন্য এলিফ্যান্ট রোডে গাড়ি প্রবেশ করাতে মিরপুর রোড বারবার বন্ধ করতে হচ্ছে। আবার শাহবাগ থেকে আসা মোহাম্মদপুর, মীরপুর, সাভারগামী গাড়িগুলোকে মূল সড়কে আনতেও বন্ধ করতে হচ্ছে গাড়ির চলাচল। এতে করে সায়েন্সল্যাব থেকে নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, আজিমপুর পর্যন্ত জ্যাম তৈরি হচ্ছে।
অপরপাশের সড়কে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে থেকে গণস্বাস্থ্য, ধানমন্ডি ২৭ ও কলাবাগান পর্যন্ত যানজট তৈরি হচ্ছে। একই অবস্থা নীলক্ষেত মোড়, আজিমপুর মোড় ও বাটা সিগন্যাল মোড়েও।

এসব সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী লোকজন বলছেন, রমজানে ভোগান্তি কমার কথা থাকলেও উল্টো বেড়েছে। গণপরিবহনের তুলনায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেশি হওয়ায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।
জহির উদ্দিন নামের এক যাত্রী বলেন, আজিমপুর থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত আসতে সময় লেগেছে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার মতো। অথচ এই রাস্তা দশ মিনিটেরও নয়। অন্যসময় গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু এখন রোজা রেখে পায়ে হাঁটার অবস্থা নেই। আবার গরমের কারণে এই গাড়িতে বসে থাকতেও অসহ্য লাগছে। সব মিলে যানজটে অসহ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
রোজায় যানজটের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে উল্লেখ করে সুজন মিয়া নামের আরেক যাত্রী বলেন, স্কুল-কলেজ খোলা রাখার কারণে সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা অনেক বেশি। যার ফলে ব্যাপক যানজট তৈরি হচ্ছে। রমজানে জনভোগান্তির কথা চিন্তা করে এসব ব্যাপারে আরো আগে থেকেই প্রশাসনের ভাবা উচিত ছিল। সকালে অফিসে যেতেও কষ্ট, আবার আসার সময়ও একই অবস্থা। আমরা সাধারণ মানুষ চরম বিপাকে পড়েছি।
তবে জনভোগান্তি কমাতে ও সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন বলে জানান সায়েন্সল্যাবে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) জাহেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, সকাল থেকেই অফিসগামী মানুষজন এবং স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের চাপ থাকায় সড়কে বাড়তি গাড়ির চাপ। তাছাড়া আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে এসব এলাকায় ব্যবসায়ী ও অন্যান্য মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি সড়ক স্বাভাবিক রাখার। সকালে চাপ কিছুটা বেশি ছিলো এখন স্বাভাবিক। বাড়তি চাপ নিয়ন্ত্রণে বিকেল তিনটা থেকে আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ ও কাজ করছে।
আরএইচটি/জেডএস