খেলাঘরের বর্ষবরণের আয়োজনে সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেওয়ার প্রত্যয়

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বর্ষবরণের আয়োজন করেছে খেলাঘর। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অধ্যাপক পান্না কায়সার।
উদ্বোধনী বক্তব্যে অধ্যাপক পান্না কায়সার বলেন, মহামারিকালেও শিশু-কিশোরসহ সারা দেশের মানুষকে নানা সহায়তার পাশাপাশি খেলাঘর পরিবার তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক কাজকর্ম চালিয়ে গেছে। করোনাত্তর নতুন স্বাভাবিক পরিবেশকে মেনে নিয়েই শিশু-কিশোরদের আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার আয়োজন অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক পান্না কায়সার ছাড়া আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, দীর্ঘ দুই বছরের করোনাকালে অন্য সবকিছুর মতোই স্থবির ছিল সাংস্কৃতিক আন্দোলনসহ শিশু-কিশোরদের শিক্ষা ও সব ধরনের সুকুমারবৃত্তি বিকাশের কার্যক্রম।
তারা আরও বলেন, এরই মাঝে সাম্প্রতিককালে সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী অপশক্তির নানা অপতৎপরতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এবারের পহেলা বৈশাখ উদযাপনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম অনলাইন ছেড়ে প্রত্যক্ষভাবে আবারো মেতে উঠেছে বাঙালির আবহমান সংস্কৃতির বর্ণিল উৎসবে।

বক্তারা বলেন, এসব আয়োজনসহ নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা-জ্ঞানে-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী যাবতীয় সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড আর ষড়যন্ত্রকে রুখে দেওয়া হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুখী-সুন্দর-অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ে তুলতে তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে দীক্ষিত করার কর্মযজ্ঞ আগের মতোই ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
উৎসবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্ত্বার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক প্রণয় সাহা এবং বাংলা একাডেমির সহকারী পরিচালক ড. শাহাদাত হোসেন নিপু।
এছাড়া খেলাঘরে ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান শহীদ উৎসবে সভাপতিত্ব ও স্বাগত বক্তব্য দেন।
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে আলোচনায় অংশ নেন এবং বিভিন্ন পর্ব পরিচালনায় ছিলেন খেলাঘরের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হান্নান চৌধুরী ও হাসান তারেক, সহ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুনীল সরকার মিন্টু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাংবাদিক অশোকেশ রায়, প্রবীর সাহা, আশরাফিয়া আলী আহমেদ নান্তু, হাফিজুর রহমান মিন্টু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, সাংবাদিক রাজন ভট্টাচার্য, কোহিনুর আক্তার শিল্পী, সুজন মজুমদার প্রমুখ।
উৎসবে খেলাঘর ঢাকা মহানগরী ও বিভিন্ন শাখা আসর ছাড়াও গাজীপুরের ক্ষণিকা খেলাঘর আসর গান, নাচ, আবৃত্তি ও অভিনয়ে অংশ নেয়। চন্দ্রালোক, সোনামনি, গোলাপ কুঁড়ি, অর্নব, ফুলকি, শ্যামল ছায়া, নোঙর, বটমূল, লাল সবুজ ও সূর্যালোক খেলাঘর আসরের পরিবেশনায় আবহমান বাঙলা সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।
এমএসি/এইউএ/আইএসএইচ