চলচ্চিত্র উন্নয়নে হাজার কোটি টাকার তহবিল

মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য এক হাজার কোটি টাকার ‘বিশেষ’ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ স্কিমের আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে মেট্রোপলিটন এলাকায় ৫ শতাংশ এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে সাড়ে ৪ শতাংশ হারে সুদ আরোপ করা হবে।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে এ টাকা সরবরাহ করতে হবে। এ স্কিম থেকে প্রথম ধাপে ৫০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। প্রথম ধাপে বিতরণ করা ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপে ৫০০ কোটি টাকা বিতরণযোগ্য হবে। কোনোভাবেই প্রতিটি সিনেমা হলের বিপরীতে ৫ কোটি টাকার বেশি হবে না।
সার্কুলার আরও বলা হয়, পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাওয়া ঋণে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ত্রৈমাসিক কিস্তিতে সর্বোচ্চ আট বছর (১ বছর + ৭ বছর) মেয়াদে গ্রাহকের মাধ্যমে পরিশোধযোগ্য হবে। বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংক এ পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণে আগ্রহী ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনের সঙ্গে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। এ স্কিমের আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণে অংশগ্রহণকারী ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ৩১ মার্চ ২০২২ এর মধ্যে আবেদন করতে হবে।
গত ১৭ জানুয়ারি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিনেমা হলের জন্য এ তহবিল গঠনের ঘোষণা দেন। এর আগে গত আগস্টে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে সিনেমা হলের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠনের নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
সাধারণভাবে পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে ব্যাংকগুলো ব্যাংক রেটে (বর্তমানে যা ৪ শতাংশ) ঋণ নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করে। করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ঘোষণা করেছে, গ্রাহক পর্যায়ে তার সর্বোচ্চ সুদ হার হবে ৫ শতাংশ।
তবে কোভিড-১৯-এর আগে সাধারণত গ্রাহক পর্যায়ে এ ধরনের তহবিল থেকে গ্রাহকরা ৯ শতাংশ সুদে ঋণ পেতেন। গত বছরের এপ্রিল থেকে ব্যাংকগুলোর নিজেদের অর্থে দেওয়া ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এ কারণে পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের সুদহার এর চেয়ে অনেক কম হবে।
এর আগে গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদ সভায় (২৮ জানুয়ারি) সিনেমা হলের জন্য এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সভায় আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে স্মারক মুদ্রা মুদ্রণের প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়।
এসআই/জেডএস