চলছে অমর একুশে উদযাপনের প্রস্তুতি

২১ ফেব্রুয়ারি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। স্মরণ করিয়ে দেয় ১৯৫২-এর ভাষা শহীদদের, যাদের জীবনের বিনিময়ে বাংলা ভাষা পেয়েছিলাম। চলছে সেই মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) শহীদ মিনার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সৌন্দর্য বাড়াতে শহীদ মিনারসহ আশেপাশের রাস্তার দেয়ালে রঙ করা হচ্ছে। এছাড়া শহীদ মিনারের মূল বেদিসহ সংলগ্ন এলাকা ঝাড় দেওয়ার পর ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করার কাজ চলছে পুরোদমে। শহীদ মিনারের চারদিকে যত্রতত্র প্রবেশ ঠেকাতে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করা হয়েছে। শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায় মশার ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। আলপনা ও সাজসজ্জার কাজও শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ২৪ জানুয়ারি একুশে উদযাপনের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহকে সমন্বয়কারী, সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. সাবিতা রিজওয়ানা রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়াকে যুগ্ম সমন্বয়কারী এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানীকে সদস্য সচিব করে কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। সমন্বয় কমিটি ছাড়াও অমর একুশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনে বিভিন্ন উপকমিটিও গঠন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রতি সংগঠন থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ জন প্রতিনিধি হিসেবে ও ব্যক্তিপর্যায়ে একসঙ্গে সর্বোচ্চ দুই জন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। শহীদ মিনারের সব প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন ও লিকুইড সাবান রাখা হবে। মাস্ক পরিহিত ছাড়া কেউ শহীদ মিনার চত্বরে প্রবেশ করতে পারবেন না।
একুশে আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এমন গোলাম রাব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, একুশে উদযাপন আমাদের রাষ্ট্রীয় আচার ও ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব। আমরা ইতিমধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করেছি। প্রতিবারের মতো অমর একুশে উদযাপনের আয়োজনে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। ইতিমধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা প্রস্তুতি সভা করেছি। শহীদ মিনারের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ধোয়া-মোছা, রঙ করাসহ যাবতীয় কাজও চলছে। বুধবারের মধ্যে শহীদ মিনার শতভাগ প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে আশা করছি।
করোনার কারণে কি পরিবর্তন আসছে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, প্রতিবার কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জনসমাগম হতো, আপ্যায়ন হতো এবার সে ব্যবস্থা থাকছে না। আমন্ত্রিত অতিথিদের শহীদ মিনার চত্বরেই আমরা অভ্যর্থনার আয়োজন করব। আর মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তাছাড়া আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছে কোনো সংগঠন থেকে পাঁচ জনের বেশি প্রবেশ করতে পারবে না।
নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি প্রক্টর জানান, একুশে উদযাপনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ১২টি পয়েন্টে ব্যারিকেড দিয়ে যান ও জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পাস ব্যতীত কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রক্টরিয়াল টিম টহল দিবে। তাছাড়াও ঢাবির বিএনসিসি ও স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবে। পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে।
ওএফ