কুমিল্লা সিটি ভোট : ইভিএমের বিশেষ পরিপত্র জারি
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে বিশেষ পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ১৫ জুন সিটি কর্পোরেশনটিতে ভোটগ্রহণ হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলবে।
সোমবার (২৩ মে) ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত ইভিএমের বিশেষ পরিপত্র জারি করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) কর্মকর্তারা সরেজমিন উপস্থিত থেকে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সব প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেবেন। এছাড়া ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইভিএম কাস্টমাইজেশনসহ নির্বাচন উপযোগী করে যথাসময়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে বলে জানিয়েছে ইসি।
পরিপত্রের বিষয়গুলো হচ্ছে-
ইভিএম ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রার্থী এবং ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার : ইভিএম ব্যবহার যেহেতু একটি কারিগরি বিষয় এবং নতুন ধরনের ব্যবহার কার্যকারিতা রয়েছে। সেজন্য সব প্রার্থী, তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের সুবিধার্থে ইভিএম ব্যবহার পদ্ধতিবিষয়ক নির্দেশিকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ : নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা অর্থাৎ প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের জন্য দুই দিনব্যাপী এবং পোলিং অফিসারদের জন্য ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের বিষয়ে এক দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ইভিএম কাস্টমাইজেশন : কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ব্যবহৃতব্য ইভিএমগুলো নির্বাচন ভবনের বেইজমেন্ট-১ এ প্রশিক্ষিত কাস্টমাইজেশন টিম দ্বারা কাস্টমাইজেশন করা হবে। কাস্টমাইজেশন কার্যক্রম ২২ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত চলবে। উল্লিখিত সময়ের মধ্যে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অথবা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মনোনীত কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন প্রার্থীদের প্রতিনিধি উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি পূর্বক কাস্টমাইজেশন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী প্রাসঙ্গিক কার্যক্রম সম্পাদন করবেন।
মক ভোটিং : নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ে সকল সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার উপস্থিত থেকে নির্বাচন সম্পন্ন করবেন। মক ভোটিং শেষে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার গণভোটে এ ব্যবহৃত ইভিএমগুলো সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে বুঝিয়ে দেবেন। অফিসাররা ভোটগ্রহণের দিন ভোটগ্রহণের জন্য ব্যবহৃত ইভিএম এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে প্রতিস্থাপন করতে হবে।
নিরাপত্তা সহকারে ইভিএমের পরিবহন, সংরক্ষণ ও কার্যকারিতা যাচাই করা : ইভিএমগুলো ইলেকট্রনিক ডিভাইস বিধায় মেশিনগুলো সারিবদ্ধভাবে রেখে যথাযথ নিরাপত্তার সঙ্গে পরিবহন করতে হবে। ভোটগ্রহণের আগের দিন অন্যান্য নির্বাচনী মালামালসহ বিভিন্ন প্রিজাইডিং অফিসারকে বুঝিয়ে দিতে হবে। প্রিজাইডিং অফিসাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারসহ অবশ্যই সঠিকতা যাচাই করবেন। কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রিজাইডিং অফিসার রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। রিটার্নিং অফিসার কন্ট্রোলরুমকে অভিহিত করে ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন অথবা প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
কারিগরি দল গঠন : প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের একজন করে কারিগরি সদস্য সহযোগিতা করবেন। এজন্য রিটার্নিং অফিসার তাদের প্রয়োজনে লজিস্টিক সাপোর্ট দেবেন। প্রিজাইডিং অফিসার ভোটগ্রহণের জন্য ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করবেন।
মোবাইল কারিগরি টিম : নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল কারিগরি টিম সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে অবস্থান করবেন। ভোটগ্রহণের দিন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের কারিগরি সমস্যা আনুষঙ্গিক লজিস্টিক সহায়তা নিশ্চিত করবেন।
ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কার্ডের এবং প্রদত্ত পিন পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা রক্ষা : ইভিএমের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কার্ড এবং মেশিন চালু করার পিন পাসওয়ার্ড প্রিজাইডিং অফিসারকে সরবরাহ করা হবে। যথাযথ নিরাপত্তার সঙ্গে ব্যবহার করে এবং এসব কার্ড এবং পাসওয়ার্ডের যথাযথ গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।
অতিরিক্ত অডিট ও পোলিং কার্ডের ব্যবহার : সুষ্ঠুভাবে সিটি নির্বাচন সম্পন্ন করার উদ্দেশে কেন্দ্রে ব্যবহৃত অডিট কার্ড ও পোলিং কার্ডের একটি সামগ্রিক বেকাপ রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংরক্ষিত থাকবে।
ইভিএম যাচাই করা : ভোটগ্রহণের আগের দিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নামের বিপরীতে ব্যালট ইউনিটে সঠিকভাবে প্রতীক সন্নিবেশিত আছে কিনা তা ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে প্রিজাইডিং অফিসার যাচাই করবেন।
ডেমো ভোটগ্রহণ : ভোটকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য সর্বদা গৃহীত ইভিএমগুলো ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনী এজেন্ট ও পোলিং এজেন্টকে ভোটগ্রহণ প্রদর্শন করতে হবে। ডেমো ভোটগ্রহণের সময় ইভিএমগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক সঠিক আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করতে হবে।
এসআর/এমএইচএস