নানা আয়োজনে পালিত হবে বিশ্ব পরিবেশ দিবস

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, আগামী ৫ জুন নানা আয়োজনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে পরিবেশ মেলা এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলার আয়োজন করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওইদিন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।একইসঙ্গে ৫ জুন থেকে ১১ জুন পর্যন্ত পরিবেশ মেলা ও ৫ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এসময় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘অনলি ওয়ান আর্থ : লিভিং সাস্টেইনেবিলি ইন হারমনি উইথ নেচার’। যার ভাবানুবাদ ‘একটাই পৃথিবী : প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন’।
তিনি জানান, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বৃক্ষ -প্রাণে প্রকৃতি প্রতিবেশ, আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ।’ আমাদের একমাত্র এই পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে, সব ধরনের প্রাণীকে বাঁচাতে হবে, অধিক পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, জনগণের মধ্যে পরিবেশ সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তরের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র এবং পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। এছাড়া দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় যথাযোগ্য গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করা হবে।
পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ শিল্প কারখানার সৃষ্ট দূষণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি রোধে পরিবেশ অধিদপ্তর সীমিত জনবল নিয়েও শিল্প কারখানাগুলো নিয়মিত মনিটর করছে। দূষণকারী শিল্প কারখানাকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। ইটভাটার সৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষি জমির উর্বর মাটি রক্ষার লক্ষ্যে সরকার ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯)’ জারি করেছে।
এই আইন বাস্তবায়ন ও পোড়ানো ইটের উৎপাদন এবং ব্যবহার কমিয়ে আনতে প্রজ্ঞাপন জারি করা করেছে। এছাড়াও বায়ু দূষণকারী অবৈধ কারখানা ও অপরিকল্পিত নির্মাণ কার্যক্রম, কালো ধোঁয়া নির্গমণকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ও মোবাইল কোর্ট কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীর ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সব মোবাইল ফোন অপারেটরের মাধ্যমে খুদে বার্তা পাঠানো ও ওয়েলকাম টিউন সংযোজন করার ব্যবস্থা করা হবে।
পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, স্লোগান প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও পরিবেশ বিষয়ক সেমিনার, রাউন্ড টেবিল আলোচনা, পরিবেশ সচেতনতামূলক কার্যক্রম, পরিবেশ অধিদপ্তর সম্পর্কিত বুকলেটের পরিমার্জিত সংস্করণ প্রণয়ন ও প্রকাশ, ইটিপিবিহীন ও দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের জন্য সচেতনতামূলক সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অবৈধভাবে দখল হওয়া বনভূমি রক্ষায় লাঠিটীলায় সাফারি পার্ক করা হচ্ছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শব্দদূষণ, বায়ুদূষণসহ সকল প্রকার দূষণ নিয়ন্ত্রণেই সরকার কাজ করছে। শিল্প-কারখানার বর্জ্য পরিশোধন কেন্দ্র বা ইটিপি (ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) অনলাইন ব্যবস্থাপনার আওতায় আসছে। নতুন বিধিমালা তৈরি হচ্ছে। তিনি পরিবেশ সংরক্ষণে সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
এসএইচআর/এমএইচএস