জঙ্গি আস্তানা গুঁড়িয়ে না দিলে আরও বড় হামলা হতে পারত

আমরা সব জঙ্গি আস্তানা গুড়িয়ে দিয়েছি, অনেক কেস স্টাডি করেছি। আস্তানা যদি গুঁড়িয়ে দেওয়া না যেত তাহলে আরও বড় বড় ঘটনা ঘটতে পারত। এটা আমাদের সফলতা বলে উল্লেখ করেছেন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এর প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) সদস্যদের পেশাগত উৎকর্ষতা সাধনে আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সিটিটিসির সহযোগিতায় রোববার (১২ জুন) সকাল থেকে দিনব্যাপী সিরডাপ মিলনায়তনে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটিটিসি প্রধান বলেন, জঙ্গিবাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আগের মতোই রয়ে গেছে, তবে আগের যে কৌশল ছিল সে কৌশল বদলেছে, ভিন্নভাবে এখন হচ্ছে। সন্তানরা কে কী করছে তা দেখা অভিভাবকদের দায়িত্ব। উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ আসলে কী, এর নেপথ্যের অনুঘটক কারা তাদের খুঁজে বের করে স্পষ্ট করার দায়িত্ব গণমাধ্যমের। হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় নিহত নিবরাস কীভাবে রেডিকালাইজড হলো! কোন প্রেক্ষাপটে কোন প্রক্রিয়ায় জঙ্গি হলো! সাংবাদিকদের পাশাপাশি জঙ্গিবাদ নিয়ে যারা বিশ্লেষণ করেন, তারাও এটা নিয়ে বিশ্লেষণ করতে পারেন
যারা রেডিকালাইজড হয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে, তাদের অবস্থাটা কেমন হয়েছিল, একদিনেই তারা বদলে যায়নি। তারা দিনের পর দিন বদল এনেছে। রেডিকালাইজড হওয়া জঙ্গিদের পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে কথা বলুন! কীভাবে তারা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করত! বাসা থেকে বের হয়ে বা হিজরতে কারা অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে, বের করুন। কী এমন স্বপ্ন তাদের দেখানো হয়েছিল, শুধু খবর প্রচারই নয়, গণমাধ্যমের দ্বৈত ভূমিকা নিতে হবে। যাতে করে জঙ্গিবাদ সমূলে নির্মূল করা যায়, বলেন তিনি।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। বর্তমান এসবি প্রধানের নেতৃত্বে সিটিটিসির পথ চলা শুরু। আজ সিটিটিসি বিশ্বের বিস্ময়। যেভাবে সিটিটিসি জঙ্গিবাদকে ভেঙ্গে দিয়েছে তা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মাইলফলক।
বাংলাদেশে সিটিটিসির অনবদ্য সফলতা আছে দাবি করে বাহিনীপ্রধান বলেন, গ্লোবাল টেরোরিজম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩ থেকে ৪০-এ নেমেছে। এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। গত বছর কিন্তু জঙ্গি হামলার মতো একটি ঘটনাও ঘটেনি। এর অবদান অবশ্যই সিটিটিসির, তথা পুলিশের।
নীরবতা নাকি নিয়ন্ত্রণ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ২০১৬ সাল পর্যন্ত অনেক ঘটনা ঘটেছে। এরপর যা ঘটেছে তা জঙ্গি আস্তানায় আক্রমণ। আমরা সব জঙ্গি আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছি, অনেক কেস স্টাডি করেছি। আস্তানা যদি গুড়িয়ে দেওয়া না যেত তাহলে আরও বড় বড় ঘটনা ঘটতে পারত। এটা সিটিটিসির সফলতা।
জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রাখার বড় ভূমিকা রয়েছে গণমাধ্যমের। বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ দেশ। মিডিয়া কর্মী থেকে অনেক ছোট ইনফো নিয়েও আমরা বড় সফলতা পেয়েছি। আমাদের গবেষণা কর্ম চলমান। আরও বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চলছে। জঙ্গিবাদের ইতিহাস, জঙ্গি সংগঠনের সৃষ্টি, কার কি ভূমিকা ছিল এর ৩৪টি গবেষণা আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। এসব গবেষণা মিডিয়া কর্মীদের অনেক বেশি কাজে দেবে বলে জানান তিনি।
কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) সদস্যদের মধ্যে সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।
জেইউ/জেডএস