বৈষম্যবিরোধী আইন সংশোধনের দাবিতে হরিজন সম্প্রদায়ের সমাবেশ

প্রস্তাবিত বৈষম্যবিরোধী আইন ২০২২ সংশোধন এবং বৈষম্যবিরোধী কমিশন গঠনের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশ জয়ভীম ছাত্র-যুব ফেডারেশন ও দলিত হরিজন সম্প্রদায়ের সমমনা ৪টি সংগঠন।
শুক্রবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জয়ভীম ছাত্র-যুব ফেডারেশনের সভাপতি প্রসেনজিত দাস মলয়ের সভাপতিত্বে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ৮ দফা দাবি উত্থাপন করে বক্তারা বলেন, বৈষম্য বিলোপ খসড়া আইন ২০২২ এর ধারাগুলো গণমানুষের আইন হয়ে উঠতে পারেনি। বৈষম্য বিলোপ খসড়া আইনে গণমানুষের হতাশার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। এদেশের মানুষ এখনো শোষণ বঞ্চনা গ্লানি নিপীড়ন অবিচার তথা অপমানিত সম্প্রদায়গুলো বৈষম্যের বেড়াজালে আবদ্ধ। এই আইন মহান সংসদে উত্থাপিত হওয়ার পর বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ আশাহত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বৈষম্য বিলোপ আইন করতে হলে সেটি হতে হবে জনবান্ধব ও উন্নয়নমুখী।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত নারী এবং অনিবাসীরা বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে যা আপনারা যুগ যুগ প্রত্যক্ষ করে আসছেন। কিন্তু অনেক সংগ্রাম ত্যাগের পর যখন এ আইন প্রণয়ন হতে চলেছে ঠিক তখনি এক শ্রেণির মানুষের কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে আর অন্য শ্রেণি হচ্ছে শোষিত ও বঞ্চিত। তা দ্বারা ও উপধারাগুলো জনবান্ধব ও কল্যাণমুখী নয়। তাই আমরা ধারা এসব ধারা সংশোধন করে ৮ দফা পেশ করেছি।
দাবিগুলো হলো,
১. বৈষম্যকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
২.বৈষম্যবিরোধী কমিশন গঠন করতে হবে। সেই কমিশনের চেয়ারম্যান হবেন সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি।
৩. সম্পূর্ণ বিচারিক ক্ষমতা থাকবে কমিশনের হাতে।
৪. বৈষম্যবিরোধী সভা আইনের ১০ ধরার ৩ উপধারা মোতাবেক শুধুমাত্র আর্থিক জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সেটি সংশোধনপূর্বক জেল জরিমানার বিধান রাখতে হবে।
৫. বৈষম্যবিরোধী খসড়া আইনের ধারার ২ নং উপধারার ঙ. চ. জ অনুচ্ছেদের সংশোধনপূর্বক দুইজন পুরুষ প্রতিনিধি ও দুইজন দলিত নারী প্রতিনিধি, দুইজন পুরুষ চা শ্রমিক প্রতিনিধি, দুইজন নারী চা শ্রমিক প্রতিনিধি এবং একজন আদিবাসী পুরুষ প্রতিনিধি এবং আদিবাসী নারী প্রতিনিধি নিশ্চিত করতে হবে।
৬. সমাজে যেহেতু প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ, ছিন্নমূল শিশু এবং নারীরাও বৈষম্যের শিকার তাদের প্রতিও সুস্পষ্ট সাম্য প্রদান করবে হবে।
৭. বৈষম্যবিরোধী খসড়া আইনের ১০ ধারার ১,২,৩ উপধারা সংশোধনীপূর্বক ভুক্তভোগী দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় মামলায় মামলা করার বিধান করতে হবে। জেলা কমিটি রাখার বিধান বাতিল করতে হবে।
৮. জাতীয় কমিটি বিভাগীয় কমিটি এবং জেলা কমিটি রাখার বিধান বাতিল করতে হবে।
সমাবেশে বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র-যুব ফেডারেশন,পথিক ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, মাইনোরেটি রাইটস ফোরাম, হরিজন মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মহাদলিত পরিসংঘের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এসকেডি