চট্টগ্রামে ফুলেল শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদদের স্মরণ

চট্টগ্রামবাসী একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বন্দরনগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মেয়র, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মীসহ সাধারণ মানুষ এসেছিলেন ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে।
একুশের প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম শহীদ মিনারে বিপুল সংখ্যক মানুষ সমবেত হন। রাত ১২টার আগেই শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। প্রথম প্রহরে নগর পুলিশের একটি চৌকস দল সশস্ত্র অভিবাদনের মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলনের বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এরপর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ফুল দিয়ে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময় কাউন্সিলর ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর কমান্ডের নেতারা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের নেতারাও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

প্রশাসনের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ হলে শহীদ মিনার জন সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় শহীদ মিনারে আসা বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী, সাধারণ মানুষ শ্লোগানে শ্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে রাখেন।
শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার পর চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, সবাই ভাষার কথা বলি, কিন্তু সেই চেতনাকে ধারণ করি না। ভাষা শহীদদের রক্তধারাকে বুকে ধারণ করে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভাষা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই একুশের চেতনাকে ধারণ করে প্রত্যেকের উচিত বাংলায় সাইনবোর্ড লাগানো।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা কোনো দিনও ষড়যন্ত্র বন্ধ করে না। তারা ষড়যন্ত্র করতেই থাকবে। স্বাধীনতার আগে ও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের সময়ও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তারপর বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে বাঙালি জাতি এগিয়ে গিয়েছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। তখনোও ষড়যন্ত্র হয়েছে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ষড়যন্ত্র হয়েছে। সকল ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করেই বাঙালি জাতি বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল। ষড়যন্ত্র এখনো চলছে, চলতে থাকবে। কিন্তু স্বাধীনতাকামী মানুষ সজাগ রয়েছে। যে কোন ষড়যন্ত্রকারীর বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে তারা বদ্ধ পরিকর।
করোনাকালে ব্যাপক জনসমাগমের ওপর বিধিনিষেধ থাকলেও শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকেই মাস্ক ছাড়া শহীদ মিনারে প্রবেশ করেন। সংগঠন থেকে সর্বোচ্চ পাঁচজন ও ব্যক্তিপর্যায়ে সর্বোচ্চ দুই জনের শ্রদ্ধা নিবেদনের যে নির্দেশনা সিএমপি জারি করেছে, অনেক সংস্থা ও সংগঠনকে মানতে দেখা যায়নি।
নগর পুলিশের পক্ষ থেকে শহীদ মিনার ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়। যানবাহন চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়।
ওএফ