প্রাণিসম্পদ খাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি গ্রহণ করবে সরকার

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ জুন ২০২২, ০৫:৩৬ পিএম


প্রাণিসম্পদ খাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি গ্রহণ করবে সরকার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, প্রাণিসম্পদ খাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও অন্যান্য প্রক্রিয়া সরকার আন্তরিকভাবে গ্রহণ করবে। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী প্রযুক্তির সঙ্গে সাধারণ জনগণকে অভ্যস্ত করতে ও সচেতনতা সৃষ্টিতে বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা প্রয়োজন। দেশের জনসাধারণ প্রাণিসম্পদ খাতে যেকোনো প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে সাদরে গ্রহণ করবে এবং সে প্রযুক্তি তারা ব্যবহার করবে।

রোববার (২৬ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ক্লিন অ্যান্ড এনার্জি ইফিসিয়েন্ট কুলিং ফর লাইভস্টক সাপ্লাই চেইন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ গতিশীলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের প্রতিটি খাতে আমূল পরিবর্তন ঘটছে। বিশেষ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের বৈপ্লবিক পরিবর্তন বিশ্বের বিশেষ নজরে এসেছে। প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে তুলনামূলক বিচারে এ খাতে আমাদের অর্জন অসাধারণ। এ কারণে বিশ্বব্যাংকসহ অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা এ খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করছে। দেশীয় বিশেষজ্ঞদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ও সাধারণ মানুষের অবদানে ইতোমধ্যে এ খাত বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।

বাংলাদেশের উন্নয়ন আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বলা হয় উন্নয়নের জাদুকর। এখন‌ শুধু উন্নয়ন নয় বরং টেকসই উন্নয়ন প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার টেকসই পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী নই। আমাদের দিক থেকে কোনো ত্রুটি না থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ভোগান্তির শিকার। এ কারণে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের পুনর্বাসন ও সহায়তার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন।

রেজাউল করিম বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে বর্তমান সরকার এবং দেশের কারিগরি বিশেষজ্ঞদের নিরলস প্রচেষ্টা রয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় পোল্ট্রি ও ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড গঠনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষ গঠন ও এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এ খাতের সত্যিকার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব ধরনের চাহিদা সরকার পূরণ করবে।

বিশ্ব এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সবার কল্যাণ সমন্বিতভাবে নিশ্চিত করতে হবে। একটি দেশ উন্নত করে অপর একটি দেশকে অনুন্নত রেখে কোনোভাবেই ধরিত্রীর সব মানুষের সমৃদ্ধি আনয়ন সম্ভব নয়। দেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণা ও অন্যান্য খাতে অসাধারণ সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছে। উন্নয়নের প্রক্রিয়া সীমিত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রান্তিক পর্যায়ে আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই। প্রান্তিক পর্যায়ে প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে না পারলে সেটা কোনো কাজে আসবে না। সরকারের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক সিদ্দিকা ভূঁইয়া মিশু। বাংলাদেশের ডেইরি খাতে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের প্রধান কারিগরি সমন্বয়ক ড. মো. গোলাম রব্বানী।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র এগ্রিকালচার ইকোনমিস্ট ক্রিশ্চিয়ান বার্জার, মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং প্রাণিসম্পদ খাতের উদ্যোক্তা ও খামারিরা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

এসএইচআর/ওএফ

Link copied