ভিয়েনায় শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত

অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল নয়টায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। পরে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দূতাবাস প্রাঙ্গণে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
দিবসের তাৎপর্য নিয়ে ভার্চুয়ালি এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিধি আরোপ করায় ভার্চুয়ালি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনায় অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভেনিয়া ও স্লোভাকিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা, সাংবাদিক, ছাত্র ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করে দিবসের তাৎপর্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, ভাষা আন্দোলনে শহীদদের রক্ত বৃথা যায়নি। পাকিস্তান সরকার শেষ পর্যন্ত বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল।

তারা বলেন, ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই একটি নতুন জাতীয় চেতনার উদ্ভব হয়েছিল। পরবর্তীতে এ চেতনা ধারণ করেই একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি। বক্তারা প্রবাসে বসবাসরত নতুন প্রজন্মের মাতৃভাষা চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আলোচনার সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত প্রথমে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহীদ, ভাষা শহীদ এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমান সরকারের উদ্যোগেই ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এ স্বীকৃতির মাধ্যমে বাঙালি জাতি বিশ্বে আরও মর্যাদাশীল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, একুশ বিশ্ব পরিমণ্ডলে আমাদের আরও সমৃদ্ধ করেছে। ইউনেস্কো উপলব্ধি করেছে যে, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস তাদের কার্যক্রম গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত দিবসের তাৎপর্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বিশ্বব্যাপী ভাষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ এবং বিকাশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে। তিনি সবাইকে একুশের চেতনা ও মূল্যবোধ ধারণ করার আহ্বান জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর অনুকরণীয় ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত। বলেন, তার নেতৃত্বে হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের অধিকারী একটি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহীদ, ভাষা শহীদ এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এনআই/এসএসএইচ