অভিবাসন কমপ্যাক্ট টাস্কফোর্সের যাত্রা শুরু

নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করা এবং অভিবাসন বিষয়ক বৈশ্বিক চুক্তি-জিসিএম বাস্তবায়ন, নিরীক্ষণ ও পর্যালোচনার লক্ষ্যে অভিবাসন কমপ্যাক্ট টাস্কফোর্স গঠন করেছে সরকার। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ টাস্কফোর্সের যাত্রা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আরও ১২টি মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সমন্বয়ে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এর সকল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ জাতিসংঘ অভিবাসন নেটওয়ার্ক সহযোগিতা করবে।
এ টাস্কফোর্স উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বৈশ্বিক অভিবাসন কমপ্যাক্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের প্রথম পদযাত্রা শুরু হলো।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক পর্যায়ে বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে অভিবাসনকে ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর মাইগ্রেশন (জিসিএম) বাস্তবায়নে 'চ্যাম্পিয়ন কান্ট্রি' হিসেবে স্বীকৃত দেশ হিসেবে অভিবাসনের বিষয়গুলো এগিয়ে নিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, আমরা গত ৫০ বছরে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বিদেশে পাঠিয়েছি। জাতীয় উন্নয়নে আমাদের এই প্রবাসীদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। অভিবাসন বহুমাত্রিক এবং জটিল একটি বিষয়। আমাদের প্রবাসীদের সুরক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য জিসিএম একটি বৈশ্বিক ব্যবস্থা হিসাবে আমাদের ব্যাপক সাহায্য করছে।
সচিব বলেন, এই টাস্কফোর্সের উদ্বোধন সেই প্রচেষ্টা বাস্তবায়নকে আরও ত্বরান্বিত করবে। নীতি-নির্ধারণ, পরিকল্পনা, তথ্য আদান-প্রদান এবং পর্যালোচনার ক্ষেত্রে পরামর্শদাতা হিসাবে ভূমিকা রাখবে এই টাস্কফোর্স।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস বলেন, বাংলাদেশ সরকার অভিবাসনকে শুধু উন্নয়নের পথ হিসাবেই বিবেচনা করেনি। একইসঙ্গে অভিবাসনকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ৮ম পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনায় প্রাধান্য দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় টাস্কফোর্স আরেকটি পদক্ষেপ।
আবাসিক সমন্বয়ক বলেন, আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা সকল অভিবাসীদের নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করবে এবং অভিবাসনকে কার্যকরভাবে পরিচালনা করবে।
জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রদের জিসিএম বাস্তবায়ন, নিরীক্ষণ ও পর্যালোচনায় বৈশ্বিকভাবে কার্যকর, সময়োপযোগী এবং সমন্বিত সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘ অভিবাসন নেটওয়ার্ক গঠন করে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মিশন প্রধান ও বাংলাদেশে জাতিসংঘ অভিবাসন নেটওয়ার্কের সমন্বয়ক আবদুসাত্তর এসয়েভ বলেন, অভিবাসন অভিবাসী, তার দেশ ও গমনকৃত দেশের জন্য ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা বয়ে আনে। অভিবাসন যখন খারাপভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন এটি নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। জিসিএম অভিবাসনের বিভিন্ন ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জগুলোকে বিবেচনায় রেখে অভিবাসীদের সামগ্রিক সুবিধা প্রদানে ভূমিকা রাখছে।
২০১৮ সালে জাতিসংঘে অভিবাসন বিষয়ক বৈশ্বিক চুক্তি-জিসিএম গৃহীত হয়। জাতিসংঘের আওতায় আন্তর্জাতিক অভিবাসনের সকল ক্ষেত্র বিবেচনায় এনে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা তৈরির লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন দেশের সরকার এক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়। এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ‘বাংলাদেশ জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক নেটওয়ার্ক’ বাংলাদেশ সরকারকে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় ব্যবস্থা তৈরির সুপারিশ করে, যা জিসিএমের সকল বিষয় বাস্তবায়ন, নিরীক্ষণ ও পর্যালোচনা করবে।
এনআই/এসকেডি