ক্রেতা-বিক্রেতা ‘উভয়ের ছাড়ে’ বেড়েছে বিক্রি

একদিন পর উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। শেষ সময়ে পছন্দ মতো কোরবানির পশু কিনছেন সামর্থ্যবানরা। অন্যদিকে বেপারীরাও উচ্চ দরের আশায় গরু-ছাগল ধরে না রেখে মোটামুটি লাভে বিক্রি করে দিচ্ছেন। তাই গত কয়েক দিনের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে কোরবানির পশুর হাটে।
রাজধানীর শাহজাহানপুর ও কমলাপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন হাটে গিয়ে দেখা যায়, সামর্থ্য অনুযায়ী গরু-ছাগল কিনে খুশি মনে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। অন্যদিকে গত কয়েকদিন গরু-ছাগল বিক্রি করতে না পারার হতাশা কাটিয়ে বেপারীদের মুখে হাসি ফুটেছে। তারা বলছেন, অন্য দিন ক্রেতারা দরদাম করে চলে যেত, আজ মানুষের মধ্যে সেই প্রবণতা কম। কোরবানির আর এক দিন বাকি থাকায় মানুষ আজ দর কষাকষি করে পশু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বেপারীরাও বেশি লাভের আশায় বসে না থেকে মোটামুটি লাভে গরু-ছাগল বিক্রি করে দিচ্ছেন। তাই আজ হাটে অনেক বেশি গরু-ছাগল বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি বেশি হওয়ায় হাসিল আদায়ও অনেক বেশি হয়েছে আজ।
শাহজাহানপুর হাটে কথা হয় গরু ব্যাপারী শাহিন মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, আজ তার ‘মমতাজ’ নামের গরুটি ২ লাখ ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) তো ৩ লাখের কমে বিক্রি করতে চাননি— এমন প্রশ্নের জবাবে শাহিন বলেন, আর তো মাত্র একদিন বাকি আছে। তাই আর বেশি লাভের আশায় ধরে রাখিনি। আজ মোটামুটি লাভে বিক্রি করে দিয়েছি। কারণ এখন বিক্রি না করলে আরও এক বছর পালতে হবে। তখন অনেক খরচ লাগবে।

তিনি আরও বলেন, ১৮টি গরুর মধ্যে ৫ তারিখে একটা বিক্রি করেছি। আর আজ ১২টি বিক্রি করেছি। এখনও ৫টি গরু আছে। আশা করি রাতে এবং কালকে (শনিবার) বাকিগুলো বিক্রি হয়ে যাবে।
এই হাটে গরু কিনতে সেগুনবাগিচা থেকে এসেছেন ব্যবসায়ী হারুন উর রশীদ। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন বিভিন্ন হাটে গিয়েছি। বেপারীরা অনেক দাম চেয়েছে। আজ মনে হয় হয়েছে গত কয়েকদিনের তুলনায় দাম একটু কম। তাই আজ একটা গরু আর একটা খাসি কিনেছি।
রাজধানীর কমলাপুরে স্টেশন সংলগ্ন হাটে কথা হয়ে তমিজ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি ফেনী থেকে ছয়টি গরু নিয়ে এই হাটে এসেছেন ৫ জুলাই। গত তিন দিনে একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। তবে আজ ৫টি গরু বিক্রি করে দিয়েছেন।
তমিজ বলেন, প্রথম গরুতে খুব একটা লাভ হয়নি। পরের গরুগুলোতে মোটামুটি লাভ হয়েছে। বাকি একটি গরু বিক্রি করতে পারলে আজই বাড়ি চলে যাব। কারণ এখানে নিজের গরু তিনটি। বাকি তিনটি কিনে এনেছি। তাদের টাকা দিতে হবে।

ছাগল বিক্রেতা আহসান উল্লাহ জানান, তারা ছয় জন ২২টি ছাগল নিয়ে কুমিল্লা থেকে এসেছেন। ১৪টি ছাগল বিক্রি করতে পেরেছেন। এগুলো বিক্রি করে যে লাভ হয়েছে তা দিয়ে গত কয়েকদিনের থাকা-খাওয়া বাদে খুব বেশি লাভ থাকবে না। জনপ্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা লাভ হবে। বাকি ছাগলগুলো ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারলে সবার জন্য ১০ হাজার করে লাভ থাকবে বলে তার আশা।
কমলাপুর হাটের হাসিল আদায়কারী রনি জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তাদের বুথে ৩ লাখ টাকার মতো হাসিল আদায় হয়েছে। রাত পর্যন্ত ৫ লাখ টাকার মতো আদায় হবে বলে তাদের আশা।
এএইচআর/এসএসএইচ