ডিএসসিসি বলছে শতভাগ বর্জ্য অপসারণ, বাস্তবতা ভিন্ন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ৭৫টি ওয়ার্ড থেকে শতভাগ কোরবানি বর্জ্য অপসারণের দাবি করেছিল কর্তৃপক্ষ। যদিও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। এখনও ডিএসসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডে কোরবানি বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এসব বর্জ্য থেকে সৃষ্ট তীব্র দুর্গন্ধের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদুল আজহার তৃতীয় দিনে আজ মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দুপুরেও দক্ষিণ সিটির ৬০ ও ৬১ নং ওয়ার্ড থেকে শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়নি। আগের দুই দিনের মতোই রাস্তার পাশে বর্জ্য পড়ে আছে। এমনকি রাস্তার মাঝখানে বর্জ্য স্তূপ করে বর্জ্য রাখা হয়েছে। যে কারণে ভোগান্তি বেড়েছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের। বর্জ্যের তীব্র গন্ধে নাক চেপে রাস্তা পার হতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে। আবার রাস্তার মাঝখানে স্তূপ করে রাখা বর্জ্যের কারণে যান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে।

৬০ নং ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ব্যস্ততম এলাকা বর্ণমালা স্কুল থেকে আরএস মার্কেট পর্যন্ত রাস্তার মাঝখানে ও দুই পাশে গরুর গোবর, নাড়িভুঁড়ি, রক্ত, মাংস কাটায় ব্যবহৃত পাটি পড়ে আছে। এর ওপর যোগ হয়েছে বাসা বাড়ির আবর্জনা। এতে ময়লার স্তূপ থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
৬১ নং ওয়ার্ডের অবস্থাও একই। এই ওয়ার্ডের ব্রাইট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে কমর আলী সড়কের মাথায় ময়লার বড় স্তূপ দেখা গেছে। এছাড়া অনেক রাস্তার মাথা থেকেই কোরবানির পশুর বর্জ্য সরানো হয়নি।
আরও পড়ুন : ট্রেনের টিকিট পেতে আজও কমলাপুরে ভিড় যাত্রীদের
ঈদুল আজহার দুই দিন পার হয়ে গেলেও এখনও পুরোপুরি বর্জ্য অপসারণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ক্ষোভ প্রকাশ করে ৬০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আনিসুর রহমান খন্দকার বলেন, দুই দিন ধরে রাস্তায় পশুর বর্জ্য পড়ে আছে। দুর্গন্ধে রাস্তায় হাঁটা যায় না। এগুলো যেন দেখার কেউ নেই। সিটি করপোরেশন বলেছিল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা হবে। কিন্তু তারা কথা রাখতে পারেনি।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির ৬০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, আমরা গতকাল আরএস মার্কেট এলাকায় বর্জ্য অপসারণ করতে এসেছিলাম। তবে শ্যামপুরে পশুর হাট ছিল বিধায় ওখানে আগে পরিচ্ছন্ন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তাই ওখানে আগে পরিষ্কার করতে গাড়ি পাঠানো হয়। আজকের মধ্যেই আরএস মার্কেট এলাকার সামনের স্তূপকৃত ময়লা অপসারণ করে ফেলব।
আরও পড়ুন : এক টুকরো কোরবানির মাংস জোটেনি যে গ্রামে
৬১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জুম্মন মিয়ার সাথে ঈদুল আজহার দিন (১০ জুলাই) রাতে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। তখন তিনি বলেছিলেন, সোমবার সন্ধ্যার আগেই সব বর্জ্য অপসারণ করা হবে। তবে মঙ্গলবার দুপুরেও বর্জ্য অপসারণ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে আজ তিনি বলেন, আমি নিজে উপস্থিত থেকে গতকাল রাত ১টা পর্যন্ত বর্জ্য অপসারণের কাজ করেছি। তারপরও ব্রাইট স্কুলের একটু সামনে একটা বড় স্তূপ রয়ে গেছে। আজকের মধ্যেই এই স্তূপসহ রাস্তার পাশে কোরবানির পশুর যত ময়লা আছে, সব পরিষ্কার করা হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের গতকাল রাতে বলেছিলেন, ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে সব ওয়ার্ড থেকেই কোরবানির পশুর শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
কিন্তু ৬০ ও ৬১ নং ওয়ার্ডের একাধিক স্থানে এখনও বর্জ্য পড়ে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, আজকের মধ্যে এসব এলাকা থেকে বর্জ্য অপসারণ করা হবে। আমরা বিষয়টি দেখছি।
এএজে/এসকেডি