প্রকল্পের দুর্নীতিতে ডিএসসিসির ৩ প্রকৌশলী ও ঠিকাদারকে জিজ্ঞাসাবাদ

বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতসহ কর্মকর্তাদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তিন প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (২০ জুলাই) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বেলা আড়াইটা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন সংস্থাটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তারা গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দেননি।
আজ যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা হলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সহকারী প্রকৌশলী মো. পারভেজ রানা, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মেজবা উদ্দিন রাসেল ও মো. দিদার আলম। এছাড়া মেসার্স নাওয়াল কনস্ট্রাকশনের পক্ষে একজন প্রতিনিধি দুদকের কাছে বক্তব্য প্রদান করেন। এর আগে গতকাল ডিএসসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
গত ১৪ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো তলবি নোটিশে ১২ প্রকৌশলী ও ঠিকাদারকে হাজির হয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা।
নোটিশে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার, রাজস্ব কর্মকর্তা শাজাহান আলী, সাবেক মেয়রের পিএস ও কর কর্মকর্তা আলীম আল রাজি ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আসাদুজ্জামানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, রাজস্ব আদায়ে অনিয়ম, সিন্ডিকেট, বদলি বাণিজ্য, বিভিন্ন মার্কেটে দোকান বরাদ্দ ব্যবস্থাপনায় অনিয়মসহ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
গত ৬ মার্চ প্রায় দেড় কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে আসামি ইউসুফ আলী সরদারের দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৪৩ লাখ ১০ হাজার ৭৮৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১ কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ৩৪ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদারকে ২০২১ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয় দুদক। তিনি ওই বছরের ৩ জুন সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন, যেখানে ১ কোটি ৭০ লাখ ৯১ হাজার ৮০০ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪৬৩ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের প্রমাণ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৪৩ লাখ ১০ হাজার ৭৮৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন ডিএসসিসির এ কর্মকর্তা।
আরএম/এসকেডি