তিন মাসেও কোনো আশ্বাস পাননি তারা

৭ বছরের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিপাকে পড়েছেন মৎস্য অধিদপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্যচাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্পে (২য় পর্যায়) রাজস্ব বাজেটের আওতায় সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ৫১২ জন ক্ষেত্র সহকারী। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে তারা এখন বেকার।
চাকরি রাজস্বকরণের দাবিতে টানা ৩ মাস ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচিও পালন করছেন। তবে এখনও অধিদপ্তরের কোনো সাড়া মেলেনি।
মৎস অধিদপ্তরের ইউনিয়ন প্রকল্পের কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা দীর্ঘ ৩ মাস ধরে সারা দেশ থেকে আসা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মচারীরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের সহকর্মীরা সবাই বেকার হয়ে গেছে। আমাদের গত জুন মাসে চাকরি শেষ হয়ে গেছে। আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এখন আর বেতন পাই না। এছাড়া আমাদের সহকর্মীরা হোটেল ও আত্মীয়স্বজনের বাসায় থেকে আন্দোলন করছি। আমরা আমাদের পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। আমাদের বয়সও শেষ যে অন্য চাকরিতে যাব। তাই অবিলম্বে আমাদের চাকরি রাজস্বকরণ করার দাবি মেনে নেওয়ার অনুরোধ করছি।
আন্দোলনরত ইউনিয়ন প্রকল্পের কর্মচারী হাছিনা আক্তার বলেন, আমরা কর্ম করে খেতে চাই কিন্তু তা দেওয়া হচ্ছে না। মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আপনি কোথায়? আপনি আমাদের সম্পর্কে সবই জানেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। আমাদের আর কতদিন রাস্তায় থাকতে হবে? পেটের দায়ে ও পরিবার বাঁচাতে চাকরি ফিরে পেতে আমরা ৯০ দিন ধরে এখানে অবস্থান করছি, কিন্তু কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আজ আমাদের সহকর্মীরা লজ্জায় বাসায় যেতে পারেন না। তারা খেতে পারছেন না এবং কর্মস্থলেও যেতে পারেন না। আমরা অবিলম্বে আমাদের চাকরি ফেরত চাই।
আন্দোলনরত সুমন সরকার বলেন, গত ৩০ জুন আমাদের চাকরি শেষ হয়ে গেছে। আমরা কোথায় যাব? দীর্ঘদিন ধরে দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষা ও উন্নয়নে কাজ করেছি, কিন্তু আমাদের দীর্ঘ পরিশ্রমকে কেউ মূল্যায়ন করেনি। আমাদের নিয়ে কেউ চিন্তাও করছে না। আমরা অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান চাই, না হলে আমাদের কোনো উপায় থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় ৬০০টি ক্ষেত্র সহকারী পদ রাজস্বখাতে সৃজনের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু মৎস্য অধিদপ্তর তা করছে না। অন্যদিকে ডিপিপি সংশোধনে বলা হয়েছে প্রকল্প শেষে পদগুলো রাজস্ব খাতে নেওয়া হবে কিন্তু অধিদপ্তর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন- মৎস অধিদপ্তরের ইউনিয়ন প্রকল্পের কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদদীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রকিবুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ সুমন হোসেন।
আইবি/এনএফ