মহাসড়কে সিএনজি চালাতে চায় চালকরা, পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:৪৬ পিএম


মহাসড়কে সিএনজি চালাতে চায় চালকরা, পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি

থ্রি হুইলার লাইসেন্সধারী চালকদের রেজিস্ট্রেশন, ব্লু বুক প্রদান, পুলিশি মামলা-হয়রানি বন্ধ ও মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা চলাচলের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সিএনজি অটোরিকশা চালক ঐক্য পরিষদ।

শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশা চালক ঐক্য পরিষদের আয়োজনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে এ দাবি জানানো হয়।

সংগঠনের আহ্বায়ক শেখ হানিফ বলেন, আমরা চালকরা দীর্ঘসময় পরিশ্রম করার পরও অন্ন-বস্ত্রসহ ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার খরচ চালানোর পর মাস শেষে ঘরভাড়া একসাথে দেওয়া দায়। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারি না। আমরা দীর্ঘদিন যাবত সিএনজি অটোরিকশার মালিক-প্রশাসন ও চাঁদাবাজ দালালদের অত্যাচার সহ্য করে আসছি। দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। আপনারা সবাই জানেন, রাস্তার পরিস্থিতি ভালো নেই। প্রতিদিন ১৬০০ টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে যাত্রা শুরু করি।

আরও পড়ুন: ম্যাজিস্ট্রেট দেখেই দোকান বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা

তিনি বলেন, আমাদের সবসময় বিড়ম্বনার মধ্যে থাকতে হয়। সামান্য অপরাধে ৭০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত মিটারের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। পার্কিং নেই বললেই চলে, অথচ নো পার্কিংয়ের মামলা করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশের পরিবহন শ্রমিকরা মনে করেন, এটা এমন একটা দেশ, ট্রাফিক সার্জেন্টরা সামনে পেলেই মনের মতো মামলা করে দেন। অপরদিকে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী, এ ক্ষুদ্র যানটির দৈনিক জমা ৯০০ টাকা করা হয়েছে। তারপরও মালিকরা ৯০০ টাকার চেয়ে অধিক হারে জমা নিয়ে থাকেন। মালিকের গাড়ির গ্যারেজ ভাড়া দিতে হয় চালককে।

যুগ্ম আহ্বায়ক বিল্লাল হোসেন বলেন, ২০০৭-০৮ সালে ঢাকার প্রকৃত লাইসেন্সধারী ৫০০০ চালকদের জন্য জনপ্রতি একটি করে রেজিস্ট্রেশনের (ব্লু-বুক) বিষয়টি রাষ্ট্রীয় অনুমোদন লাভ করে। এগুলোকেই তৎকালীন সরকার যাচাই-বাছাইয়ের পর ৩১৯৬ জন লাইসেন্সধারী চালকের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জনপ্রতি ৫০ টাকা গ্রহণ করে আবেদনপত্র গ্রহণ করে। অবশিষ্ট ১৮০৪ জন চালকদের নিবন্ধন দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। এছাড়া দুঃখের বিষয় ১৫ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত চালকরা সিএনজি অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন পায়নি।

দাবি জানিয়ে চালকরা বলেন, নির্ধারিত ৫০০০ সিএনজি অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা মহানগর থেকে কোনো গাড়ি বন্ধ বা উঠানো চলবে না। প্রশাসন কর্তৃক সিএনজি অটোরিকশায় চাঁদাবাজি বন্ধ করে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে হবে। চলমান ৫০০০ সিএনজি অটোরিকশা চালকদের আন্দোলনকে বিভ্রান্ত ও বিভক্ত করার জন্য বাড়তি ভাড়া আদায়কারী মালিকরা চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। মালিকরা সিন্ডিকেট করে ৯০০ টাকার দৈনিক জমা ১১০০-১৩০০ টাকা নিচ্ছে। চালকরা বিআরটিএ গিয়ে কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। প্রায় ১০০০ সিএনজি অটোরিকশা মালিকদের কাছে ঢাকা শহরের প্রায় ৫০ হাজার সিএনজি অটোরিকশা চালক ও এক কোটি যাত্রী জিম্মি। যাত্রীদের ধারণা, সিএনজি চালকেরা যাত্রীদের ওপর জুলুম করে কিন্তু আমরা কতটা অসহায় সে কথা কখনো কেউ জানেও না, শুনেও না। আমরা চালকরা নিয়োগপত্র না থাকায় বছরে তিন-চার বার বেকার হই। সিএনজি অটোরিকশা চালকদের নামে বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে। এরা মূলত মালিকপক্ষের দালালি করে নিজেদের আখের গোছানো ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। আমরা চাই এসব সমস্যা দূর হোক।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন পরিষদের সদস্য সচিব মো. গোলাপ হোসেনসহ ঢাকা মহানগরীর সিএনজি অটোরিকশা চালকরা।

আইবি/এসএসএইচ

Link copied