লন্ডন-নিউইয়র্ক হয়ে ওয়াশিংটনে শেষ হবে প্রধানমন্ত্রীর সফর

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:২১ পিএম


লন্ডন-নিউইয়র্ক হয়ে ওয়াশিংটনে শেষ হবে প্রধানমন্ত্রীর সফর

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা। তার আগে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে থাকবেন ৪ দিন।

যুক্তরাজ্যে চারদিনের সফরের শেষদিন সদ্য প্রয়াত ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর যুক্তরাজ্য থেকে সরাসরি নিউইয়র্ক যাবেন তিনি। সেখান থেকে পরে যাবেন ওয়াশিংটন ডিসিতে। সব মিলিয়ে ২ সপ্তাহের বেশি সময়ের জন্য বৃহস্পতিবার দেশ ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

আরও পড়ুন : ‘যুদ্ধ নয়, আলোচনায় সমাধান’ বিশ্বকে বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী

ড. মোমেন বলেন, ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক পর্ব শুরু হবে। এ অধিবেশনে যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল আগামী ২০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন। নিউইয়র্ক ভ্রমণের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী ১৫-১৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য ভ্রমণ করবেন। নিউইয়র্কের সফর শেষে তিনি ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থান করবেন।

জাতিসংঘে যে বিষয়গুলো তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে উচ্চপর্যায়ের সাধারণ আলোচনায় এবারও বাংলা ভাষায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘে ১৯তম ভাষণ দেবেন।

ভাষণে বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশ এবং বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কোন বিষয়গুলো তুলে ধরবেন সেগুলো সংবাদ সম্মেলনে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বক্তৃতা দেবেন। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং প্রযুক্তি খাত বিকাশে সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

dhakapost

মোমেন বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে যে প্রতিকূলতার মুখামুখি হতে হবে সে বিষয়টি এবং সংকট মোকাবিলায় একতরফা জবরদস্তিমূলক পদক্ষেপ কিংবা নিষেধাজ্ঞার মতো সিদ্ধান্ত না নিয়ে সংকট সমাধানে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান এবং বহুপাক্ষিকতাবাদকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে গুরত্বারোপ করতে পারেন।

আরও পড়ুন : অনেক ডাক্তার উপজেলা পর্যায়ে যেতে চান না

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনার মতো ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলার লক্ষ্যে টিকা এবং প্রতিষেধকের ন্যায্য ও আরও ন্যায়সঙ্গত বণ্টনের জন্য আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করতে পারেন তিনি। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে উপায় খুঁজে বের করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাতে পারেন। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ অবস্থান, সন্ত্রাস ও সহিংস উগ্রপন্থার বিষয়ে বাংলাদেশের 'জিরোটলারেন্স' নীতি, সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ অভিবাসন অভিবাসীদের মৌলিক পরিষেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, এবং ফিলিস্তিন সম্পর্কিত  বিষয়সমূহ তার বক্তব্যে উঠে আসবে।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা সমস্যা এবং টেকসই আবাসন বিষয়ে পৃথক দুটি সাইড ইভেন্ট আয়োজন করবে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গাবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সাইড ইভেন্ট ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী ওই সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ওআইসি সেক্রেটারিয়েট, কানাডা, সৌদি আরব, তুর্কি, গাম্বিয়া, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা বিষয়ক সাইড ইভেন্ট কো-স্পন্সর করবে। জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার, জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত, এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক সেখানে রোহিঙ্গা বিষয়ে ব্রিফ করবেন।

রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশসহ মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা হবে কি না, জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, আমরা এ ইস্যুটা তুলে ধরব। বিশ্ব সম্প্রদায়ের এ ব্যাপারে আরও জোর দেওয়া উচিত। কারণ এটার সমাধান তো হচ্ছে না।

মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ সংঘাত প্রত্যাবাসনকে অনিশ্চয়তায় ফেলছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, সেটা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বোঝা যাবে। হয়ত এটা আমাদের প্রত্যাবাসনে সাহায্য করতে পারে আবার উল্টোটাও হতে পারে। উই ডোন্ট নো, আমরা সবসময় আশাবাদী।

এনআই/এসকেডি

Link copied