জেল সুপারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা : পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত এক মামলায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় রূপম কান্তি নাথ নামের এক বন্দিকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক শক, নেশা ও বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে নির্যাতনের অভিযোগে জেল সুপার, জেলারসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী ঝর্ণা রানী দেবনাথ।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাজিব দাশ ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, মামলায় ব্যবসায়ী রতন ভট্টাচার্য, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার, জেলার ও জেলখানার কর্তব্যরত সহকারী সার্জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য রেখেছেন।
নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ১৩ (১) (২) এর (ক) (খ) (গ) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে জেল সুপার, জেলারসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলায় আনা অভিযোগ পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বিকেলে আদালত এ আদেশ দেন।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাজিব দাশ বলেন, মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।
এছাড়াও বন্দি ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে নতুনভাবে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১১ ধারায় আরও একটি পিটিশন দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী রাজিব দাশ।
ভুক্তভোগী রূপম কান্তি নাথ চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী এলাকার বাসিন্দা। তার স্ত্রী ঝর্ণা রানী দেবনাথ বলেন, গত ১৫ ডিসেম্বর সুস্থ অবস্থায় জেল হাজতে প্রেরিত হয়। এর পর জেল হাজতে মামলার বাদী রতন ভট্টাচার্যের, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার, জেলার ও জেলখানার কর্তব্যরত সহকারী সার্জন মিলে শারীরিকভাবে হত্যার চেষ্টা করে শরীরের বিভিন্নস্থানে বৈদ্যুতিক শক ও রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়াও শরীরে দুইটি নেশা ও বিষাক্ত জাতীয় ইনজেকশন পুশ করে রূপম কান্তিকে হত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, এজাহারভুক্ত আসামি রতন ভট্টাচার্যের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত একটি মামলায় (জিআর মামলা নং ৩৩২/১৮) গত ১৫ ডিসেম্বর কারাগারে যান ভুক্তভোগী রূপম কান্তি নাথ। এরপর থেকে রূপমের পূর্বপরিচিত রতন ভট্টাচার্য নামের এক ব্যক্তি কারাগারের কর্মকর্তা ও কারা হাসপাতালের চিকিৎসকের মাধ্যমে নির্যাতন করে আসছেন।
অভিযোগে বলা হয়, বন্দি রূপম কান্তি নাথকে অন্যায়ভাবে বিচারাধীন মামলায় নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তি আদায় করার জন্য এবং মানসিকভাবে স্থায়ীভাবে ভারসাম্যহীন করার জন্য শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিষাক্ত নেশা জাতীয় দ্রব্য পুশ ও বৈদ্যুতিক শক দিয়ে নির্যাতন করেছেন।
নির্যাতনের বিষয়ে সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, যা বলতেছেন এর অস্তিত্ব কারাগারে নেই। কারাগারে কাউকে নির্যাতন করা হয় না। শক দেওয়া ও বিষাক্ত ওষুধে দেয়া হত্যাচেষ্টার বিষয় কোনো দিন শুনিনি। কারাগারে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
কেএম/এফআর