ড্যাপ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি

টেকসই, অন্তর্ভূক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত শহর গড়ে তুলতে দ্রুত ডিটেল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিশ্ব নগর দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত 'টেকসই ও অন্তর্ভূক্তিমূলক ঢাকা গড়তে ড্যাপ বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ চাই' শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, বাসযোগ্য শহরের তালিকায় ১৭৩টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ১৬৬। ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট প্রকাশিত এ তালিকা অনুযায়ী, ঢাকার বসবাসযোগ্যতা প্রায় তলানিতে। বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তোলার প্রত্যয়ে গত ২৩ আগস্ট বিষদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) অনুমোদিত হয়েছে। এতে পথচারীবান্ধব অবকাঠামো গড়ে তুলে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, গ্রিন নেটওয়ার্ক-ব্লু নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নগরবাসীর জন্য মাঠ-পার্ক তৈরি, সড়ককে গণপরিসরে পরিণত করাসহ বিভিন্ন বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। একটি টেকসই, অন্তর্ভূক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত শহর গড়ে তুলতে দ্রুত ড্যাপ বাস্তবায়ন জরুরি।
আয়োজনে বক্তারা আরও বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ির আধিক্য ঢাকা শহরের যানজট ও দূষণের অন্যতম কারণ। হেঁটে ও সাইকেলে যাতায়াতের সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা হলে ব্যক্তিগত গাড়ির ওপর নির্ভরশীলতা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। সাইকেলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ঢাকা শহরে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু জায়গায় সাইকেল লেন দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে কোনো নেটওয়ার্ক নিশ্চিত হয়নি। বিষদ অঞ্চল পরিকল্পনায় অগ্রাধিকারমূলকভাবে ২০২ কিলোমিটার সাইকেল লেন নির্মাণের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে, যা সাইক্লিস্টদের উপকৃত করবে এবং নগরে অযান্ত্রিক যান প্রাধান্য পাবে। এছাড়াও ঢাকা শহরের অধিকাংশ গণস্থাপনা ও গণপরিসর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব নয়। ড্যাপ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। অন্যথায় একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক শহর নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।
ঢাকা শহরে যানজটের অন্যতম বড় কারণ ব্যক্তিগত গাড়িতে স্কুল ট্রিপ উল্লেখ করে তারা বলেন, বিষদ অঞ্চল পরিকল্পনায় ‘বিদ্যালয়ভিত্তিক অঞ্চল ধারণা’ বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। যেখানে প্রতিটি এলাকায় সমমানের বিদ্যালয় নিশ্চিত করা হবে এবং শিক্ষার্থীরা এলাকার বিদ্যালয়েই শিক্ষা গ্রহণ করবে। এ ধারণাটি বাস্তবায়ন হলে হেঁটে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত হবে এবং এলাকাভিত্তিক সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। এছাড়াও বিষদ অঞ্চল পরিকল্পনায় ৫টি বৃহৎ আঞ্চলিক পার্ক, ৫৫টি জলকেন্দ্রিক পার্ক, ১৪টি বৃহৎ ইকোপার্ক, ১৪টি অন্যান্য পার্ক ও খেলার মাঠ তৈরির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে এবং প্রজেক্ট অফিসার প্রমা সাহার সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান ময়না, সাধারণ সম্পাদক মো তৈয়ব আলী, বি-স্ক্যানের কো-অর্ডিনেটর ইফতেখার মাহমুদ, ডিজ্যাবিলিটি ডিফারেন্ট প্রোগ্রামের পরিচালক মো. জাকির হোসেন, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং বাংলাদেশের পলিসি অফিসার আ ন ম মাছুম বিল্লাহ ভুঁঞা, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এম এ মান্নান মনির, আলী হোসেন বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক অর্ণব দাস প্রমুখ।
এএসএস/জেডএস